শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
সেই কষ্টের ঈদযাত্রার শঙ্কা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ২৭ স্পটে যানজটের ভয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা প্রতিনিধি

দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ২৭ স্পটে নিত্যসঙ্গী যানজট। এবারের ঈদযাত্রায় এসব স্পটে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ বাজার ও         স্থাপনার কারণে ঈদের আগে-পরে যানজট ও ভোগান্তি ভয়ংকর রূপ ধারণ করতে পারে। যদিও হাইওয়ে পুলিশের দাবি- ঈদের আগে মহাসড়ককে যানজটমুক্ত করতে নেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ।

হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিয়নের পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ককে ঈদে যানজটমুক্ত রাখতে এরই মধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। চিহ্নিত যানজটপ্রবণ এলাকাগুলোয় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা কাজও শুরু করেছে। মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ চলছে। অবৈধভাবে চলাচলকারী যানবাহনগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। শিগগিরই মহাসড়কের সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আমরা বৈঠক করব। তাদের সমস্যাগুলো শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ২৫৬ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে ২৭টি বাজার। ওই বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড়, বাজারে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক, ভ্যান, সিএনজি টেক্সি, রিকশা এবং লোকজনের মহাসড়কের ওপর দিয়ে চলাচলের ফলে যানজট লেগেই থাকে। যা ঈদ কেন্দ্র করে ভয়ংকর আকার ধারণ করে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, ভাটিয়ারী, বাড়বকুণ্ড, মিরসরাই, বারইয়ারহাট, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম বাসস্ট্যান্ড, চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড, নিমসার বাজার, পদুয়ার বাজার, মদনপুর মোড়, গৌরীপুর বাজার, ইলিয়টগঞ্জ বাজার, মাধাইয়া বাজার, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া ভবেরচর, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ, সোনারগাঁ মোড়, সাইনবোর্ড, শিমরাইল, কাঁচপুর এলাকার যানজট এ মহাসড়কের সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রামের সিটি গেট থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় সড়ক দখল করে অবৈধ পার্কিং, সড়কের পাশ ঘেঁষে দোকান নির্মাণের ফলে প্রায়ই যানজট তৈরি হয়। এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার ১০৫ কিলোমিটার অংশে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীরা! মোড়ে মোড়ে অবৈধ পার্কিং, তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের দাবি উঠেছে। সরেজমিনে মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মহাসড়কের ওপর সারি সারি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দাঁড়িয়ে রয়েছে। মহাসড়ক হয়ে এসব যানবাহন চলাচল করছে বিভিন্ন স্থানে। এ এলাকায় মহাসড়কের ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী দুটি লেনই অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে। যার কারণে মহাসড়কের এ অংশে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে, ঘটে দুর্ঘটনাও। এ ছাড়া জরুরি যান চলাচলে সৃষ্টি হয় প্রতিবন্ধকতা। চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার এলাকায় দেখা গেছে, বিভিন্ন মালামাল নিয়ে নসিমন, করিমন ও ভটভটি অবাধে চলাচল করছে। সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী এলাকায় মহাসড়কের ওপরই সিএনজিচালিত অটোরিকশার অঘোষিত স্ট্যান্ড। একই অবস্থা মহাসড়কের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড, কোটবাড়ি বিশ্বরোড, আলেখারচর বিশ্বরোড, সেনানিবাস এলাকায়। এসব স্থানে উল্টোপথেও চলাচল করে এসব নিষিদ্ধ যানবাহন। এ ছাড়া মহাসড়কের নিমসার, চান্দিনা, ইলিয়টগঞ্জ, গৌরীপুরসহ দাউদকান্দির বিভিন্ন এলাকাতে অবৈধ পার্কিং দেখা গেছে। গৌরীপুর বাজারের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, সিএনজি অটোরিকশা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অবৈধ তিন চাকার যানবাহনের দখলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গৌরীপুর এলাকা। এতে মহাসড়কে চলাচলরত দূরপাল্লার যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি সেবার যানবাহনগুলোকে যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে। যাত্রীদেরও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ময়নামতী হাইওয়ে থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, সুয়াগাজী, পদুয়ার বাজার, ক্যান্টনমেন্ট ও নিমসার আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। সেখানে অবৈধ পার্কিং সরাতে আমরা কাজ করছি। এ ছাড়া নিয়মিত ডিউটির সঙ্গে টহলও বাড়ানো হচ্ছে। আশা করি সবার সহযোগিতা পেলে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের কোনো সমস্যা হবে না।

সর্বশেষ খবর