শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
সেই কষ্টের ঈদযাত্রার শঙ্কা

গাজীপুর ও সাভারে তীব্র ভোগান্তির আশঙ্কা

গাজীপুর ও সাভার প্রতিনিধি

এবারের ঈদযাত্রায় গাজীপুর ও সাভার এলাকায় দুটি বড় প্রকল্পের কাজ চলতে থাকায় তীব্র ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজীপুরে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-বিআরটি এবং সাভার এলাকায় ঢাকা-আশুলিয়া    এক্সপ্রেসওয়ের কাজের জন্য সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ফলে ঈদযাত্রীদের নির্বিঘ্ন চলাচল নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। যানজটের কারণে প্রতিবছর ঈদযাত্রায় দুর্ভোগে পড়েন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। পুলিশ বলছে, এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত বেশ কয়েক বছর ধরে বিআরটি প্রকল্পের কাজ চলছে। সড়কের উন্নয়নের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারের কাজও চলমান। এতে বিভিন্ন পয়েন্টে যানবাহন ধীর গতিতে চলতে হচ্ছে। যার কারণে ১৩ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে বর্তমানে সময় একটু বেশি লাগছে। এ ছাড়া মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা অতিক্রম করতে পারলে এ মহাসড়কে যানজটের তেমন আশঙ্কা থাকে না। তবে মহাসড়কের ভবানীপুর বাজার বাসস্ট্যান্ড, হোতাপাড়া বাসস্ট্যান্ড, বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ড, মাস্টারবাড়ী বাজার, সিড স্টোর বাজার এলাকায় যাত্রী ওঠানামার সময় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ঈদে যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। ঢাকা থেকে আসা যানবাহনগুলো টাঙ্গাইল মহাসড়কে ওঠার আগে চন্দ্রা মোড়ে যানজট হয়। এ ছাড়া কড্ডা ফ্লাইওভারের পশ্চিমে, কোনাবাড়ী আন্ডারপাসের পূর্বেও যানজট পড়ার আশঙ্কা থাকে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক বিভাগ) নাজমুস সাকিব খান বলেন, ঈদে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা মোড় ছাড়া অন্যান্য পয়েন্টে তেমন যানজটের আশঙ্কা নেই। ভবানীপুর, হোতাপাড়াসহ অন্যান্য পয়েন্টে ঈদের আগে শিল্পকারখানা ছুটি হলে তখন মানুষের চাপ একটু বেড়ে যায়। তাও যাত্রী ওঠা-নামার কারণে একটু সমস্যা হয়। এবারের ঈদুল ফিতরে ঘরে ফেরা মানুষের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সড়ক, মহাসড়কে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবার গাজীপুর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় এক হাজার ফোর্স মাঠে থাকবে। তাদেরকে বিভিন্ন পয়েন্টে মোতায়েন করা হবে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ঈদে বড় মাত্রায় যানজট লাগার সম্ভাবনা নেই। মানুষ নির্বিঘ্নে ও নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন।

এদিকে আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় প্রতিদিন। ঈদকে সামনে রেখে লোকাল বাস, ট্রাক, মিনিট্রাক ও মাইক্রোবাসে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়েও বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কের জিরাবো, আশুলিয়ার, বাইপাইল, নরসিংহপুর এলাকায় সড়কটির উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় প্রতিদিন। সন্ধ্যার পর থেকেই সড়কটিতে যানবাহন বেড়ে যায়। ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ। বাইপাইল থেকে শুরু হওয়া ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়াল সড়ক যুক্ত হবে বিমানবন্দরের সামনে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে। দুটি মিলে তখন পুরো এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য হবে ৪৪ কিলোমিটার। আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার পথে যানজট দেখা যায়। যানজটের তাববব বেশি ছিল আবদুল্লাহপুর থেকে নরসিংহপুর পর্যন্ত। গাড়ি নিয়ে এই পথ পাড়ি দিতে ২০মিনিটে রাস্তা ৬ ঘণ্টা সময় লেগেছে। ঈদযাত্রা শুরু হতে এখনো বাকি কয়েক দিন। কিন্তু এরই মধ্যে যানজটে প্রায় অচল আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়ক। ফলে ঈদযাত্রার চাপ শুরু হলে এই সড়কে যানজট আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন যানচালক ও যাত্রীরা। ঈদে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিয়ে শঙ্কিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও।

ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড চার লেনে সড়ক সম্প্রসারণ, সড়কের মাঝখানে কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে বিভাজক তৈরি ও সংস্কারের কারণে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সৃষ্ট হয় তীব্র যানজটের। কোথাও আবার থেমে থেমে চলছে যানবাহন। কোথাও দীর্ঘ যানজটে স্থবির হয়ে পড়েছে মহাসড়ক। ঈদকে সামনে এ সড়কে ঢাকামুখী যাত্রীরাও পড়েছেন বিপাকে।

ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন ঈদকে সামনে রেখে লোকাল বাস, ট্রাক, মিনিট্রাক ও মাইক্রোবাসে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়েও বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কের জিরাবো, আশুলিয়া, বাইপাইল, নরসিংহপুর এলাকায় সড়কটির উভয়পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় প্রতিদিন। সন্ধ্যার পর থেকেই সড়কটিতে যানবাহনের পরিমাণ বেড়ে যায়।

সর্বশেষ খবর