ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক চার দিনের সফরে আগামী ২৫ মার্চ ঢাকায় আসছেন। বাংলাদেশের আমন্ত্রণে ১১ বছর পর আবার স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন তিনি। সাভার স্মৃতিসৌধ ও বঙ্গবভনে রাষ্ট্রপতির অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণসহ রাজার এই সফরে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি নবায়ন হতে পারে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার মো. শহীদুল হক বলেন, ‘জানুয়ারিতে নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর তিনিই হবেন বিদেশ থেকে আসা প্রথম অতিথি। সেই হিসেবে ভুটানের রাজার ঢাকা সফর বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।’ বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী দেশ হচ্ছে ভুটান। ঢাকা সেটিকে মূল্য দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় সৎ প্রতিবেশীসুলভ মনোভাব নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে।’
উত্তরবঙ্গের জেলা কুড়িগ্রামে ভুটানের বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল দেওয়ার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, কৃষি, স্বাস্থ্য খাতসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার বিষয়টি ভুটানের রাজার সফরে আলোচনায় আসতে পারে।এ বিষয়ে একটি সূত্র জানায়, কৃষি খাত বিশেষ করে ফলজাতীয় পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে আছে ভুটান। বাংলাদেশে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে বিনিয়োগের জন্য কুড়িগ্রামে ভুটানকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে রাজার এই সফরে এ বিষয়ে একটি চূড়ান্ত চুক্তি সই হবে। এ ছাড়া ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করতে চায় বাংলাদেশ। এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবারের সফরে। ভুটানের একটি হাসপাতালে বার্ন ইউনিট করে দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। আশা করা হচ্ছে এ বিষয়েও একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এই সফরে নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে সম্পর্ককে শুধু দ্বিপক্ষীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে নয়, বরং আঞ্চলিকতার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখা দরকার। এ কথা উল্লেখ করে শহীদুল হক বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ওই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।’ উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার অধীনে পানি, বিদ্যুৎ এবং কানেক্টিভিটি নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও ভারত। এটা সফল করতে হলে এই চারটি দেশের একে অন্যের সঙ্গে সহযোগিতা ও বোঝাপড়া অত্যন্ত জোরালো হতে হবে।
শহীদুল হক বলেন, পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সৎ প্রতিবেশীসুলভ মনোভাবকে প্রতিবেশীরা সবসময় মূল্য দেয় এবং সে কারণে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নেতৃত্বদানকারী দেশ হতে পারে।