রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা
ভারতে লোকসভা নির্বাচন

কংগ্রেসের ইশতেহারে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে প্রাধান্য

কলকাতা প্রতিনিধি

লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের প্রাচীন রাজনৈতিক দল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস গতকাল নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছে। এতে আন্তর্জাতিক বিষয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশ, চীন, মালদ্বীপ, ভুটান এবং মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ককে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। জাতীয় বিষয়ে জনস্বার্থরক্ষার নানা বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে বেশ কতগুলো দিক তুলে ধরা হয়েছে। রাজধানী নয়াদিল্লিতে দলের সদরদফতরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ইশতেহার প্রকাশ করা হয়। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, সবেক সভাপতি সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী এ ইশতেহার প্রকাশে অংশ নেন। নির্বাচনি ইশতেহারকে ‘নয়া পত্র’ নামে অভিহিত করা হয়েছে। ইশতেহারে তিন ‘ডাব্লিউ’-এর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে যেমন- ওয়ার্ক, ওয়েলফেয়ার ও ওয়েলথ। পাঁচটি স্তম্ভের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতি জোরদার করা হয়েছে। স্তম্ভগুলো হলো ইয়ুথ জাস্টিস, জেন্ডার জাস্টিস, ফার্মার্স জাস্টিস, ওয়ার্কার্স জাস্টিস ও ইকুইটি জাস্টিস।

নির্বাচনি ইশতেহারে কংগ্রেস যেসব বিষয় জানিয়েছে সেগুলো হলো : এক. প্রত্যেক নাগরিকের মতো সংখ্যালঘুদেরও পোশাক, খাদ্য, ভাষা ও ব্যক্তিগত আইন পছন্দের স্বাধীনতা থাকবে। ব্যক্তিগত আইনের সংস্কারকে উৎসাহিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ ও সম্মতিতে এ ধরনের সংস্কার করা হবে। দুই. সরকারি পরীক্ষা এবং সরকারি পদগুলোর আবেদন ফি বাতিল করা হবে। ব্যাপক বেকারত্বের কারণে, ত্রাণের এককালীন ব্যবস্থা হিসেবে সব শিক্ষার্থী শিক্ষাঋণের ক্ষেত্রে ১৫ মার্চ ২০২৪ তারিখে অপরিশোধিত সুদসহ প্রাপ্য পরিমাণটি লিখে দেওয়া হবে এবং ব্যাংকগুলোকে সরকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। তিন. এলজিবিটিকিউআইএ+ সম্প্রদায়ের অন্তর্গত দম্পতিদের মধ্যে নাগরিক ইউনিয়নকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি আইন আনা হবে। চার. জাতি ও উপ-বর্ণ এবং তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা গণনা করার জন্য দেশব্যাপী আর্থ-সামাজিক ও বর্ণ জনগণনা পরিচালনা করবে এবং এসসি, এসটি এবং ওবিসিদের জন্য সংরক্ষণের ওপর ৫০ শতাংশ ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর জন্য একটি সংবিধান সংশোধনী পাস করা হবে। পাঁচ. জাতীয় সামাজিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় প্রবীণ নাগরিক, বিধবা এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পেনশনে কেন্দ্রীয় সরকারের অবদান মাসিক ২০০-৫০০ টাকা। কংগ্রেস এই পরিমাণ বাড়িয়ে মাসে ১ হাজার টাকা করা হবে। ছয়. গরিব মেয়েদের বছরে ১ লাখ টাকা দেওয়া হবে। পাশাপাশি দেশে সংরক্ষণের সীমা ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে। ইশতেহারের ‘বৈদেশিক নীতি’ অংশে বলা হয়েছে, ভারতের নিকটতম প্রতিবেশীদের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেবে কংগ্রেস। এতে বলা হয়েছে, আমরা বাংলাদেশ ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে সবচেয়ে প্রাধান্য দেব। নপাল ও ভুটানের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কের প্রাধান্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করব এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য তাদের শক্তিশালী করব। আমরা দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে কাজ করব। আমরা শ্রীলঙ্কাকে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে (বিশেষ করে তামিলদের) সঙ্গে সহায়তা করব। মালদ্বীপ, মিয়ানমার ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটাব। ইশতেহারে ভারত জোড়ো ন্যায়যাত্রার ৫ মূল স্তম্ভ- যুবসমাজ, কৃষক, নারী, শ্রমিক ও ভাগীদারি গুরুত্ব পেয়েছে। রয়েছে ২৫ ধরনের গ্যারান্টি। এ সময় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টিন (বিজেপি) গত ১০ বছরের শাসনকালে ভারতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ন্যায় ব্যবস্থা। তাই কংগ্রেসের এই ইশতেহার ‘ন্যায়ের দস্তাবেজ’। এতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, পঞ্চ ন্যায়কে।

 

সর্বশেষ খবর