সোমবার, ৬ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

বড় ঘাঁটি বিদ্রোহীদের দখলে

মাইন বিস্ফোরণে পাঁচ বাংলাদেশি আহত

বান্দরবান ও কক্সবাজার প্রতিনিধি

বাংলাদেশ লাগোয়া মংডুর কাছে মিয়ানমার বাহিনীর বড় একটি ঘাঁটি দখলে নিয়েছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। যুদ্ধের তীব্রতা আরও বেড়েছে এ অঞ্চলে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা-সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে দুটি পৃথক স্থলমাইন বিস্ফোরণে পাঁচ বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। আহত সবাই কক্সবাজার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিকে, কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে অস্ত্রসহ মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও অন্তত ৮৮ সদস্যের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, গতকাল সকালে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার নম্বর ৪৭ ও ৪৮-এর ওপারে মিয়ানমার অংশে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হন কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার বাসিন্দা মো. রফিক, মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও রশিদ আহমেদ। এদের মধ্যে মাইনের স্পি­ন্টারের আঘাতে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঘটনার পরপর আহতদের উদ্ধার করে কক্সবাজার জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন। নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আবছার ইমন জানান, শনিবার সন্ধ্যার দিকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ৪৭ ও ৪৮-এর ওপারে মিয়ানমার অংশে স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি। আহত নুরুল আবছার (১৮) এবং মো. বাবু (১৭) নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

 এদিকে স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, আহতরা সীমান্তের ওপারে চোরাচালানের মাল আনা-নেওয়া, গরু পাচার করতে গিয়েই স্থলমাইন বিস্ফোরণের স্বীকার হয়েছে। সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী বাহিনীর যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রতিপক্ষকে ঠেকাতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো লাইনের ওপারে এ ধরনের স্থলমাইন পুঁতে রাখা হয়েছে। এদিকে, কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে অস্ত্রসহ মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও অন্তত ৮৮ সদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল ভোরে তিনটি কাঠের ট্রলারে সীমান্তে অনুপ্রবেশের সময় কোস্ট গার্ড তাদের হেফাজতে নেয়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাদের নেওয়ার সময় দেখেছেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে কোস্ট গার্ডের দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। তবে কোস্ট গার্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশে আসা বিজিপির সদস্যদের নিরস্ত্রীকরণ করে বিজিবির কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি নিয়ে বিজিবির কোনো কর্মকর্তাও কথা বলতে রাজি হননি। তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার উইংয়ের মহাপরিচালক মিয়া মো. মাঈনুল কবির সাংবাদিকদের বলেন, বিজিপির সদস্যরা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তবে কতজন সেটা এখনো জানা যায়নি। তাদেরও বিজিবির হেফাজতে রাখা হবে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আদনান চৌধুরী বলেন, স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে গতকালও বিজিপির ৮০ থেকে ৯০ জন সদস্য পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি কোস্ট গার্ড ও বিজিবি দেখছে। উল্লেখ্য, এর আগে দুই দফায় পালিয়ে আসা বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ৬১৮ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ২৮৮ বিজিপি ও সেনাসদস্যকে ফেরত পাঠায় বাংলাদেশ। এর আগে আশ্রয় নেওয়া ৩৩০ জন বিজিপি, সেনা ও কাস্টমস কর্মকর্তাকে ১৫ ফেব্রুয়ারি স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর