সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা
যুবলীগ নেতা হত্যা

আওয়ামী লীগ নেতাসহ মৃত্যুদন্ড নয়জনের

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যুবলীগ সভাপতি জামাল উদ্দিনকে হত্যার দায়ে চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল হোসেন বাচ্চুসহ নয়জনকে মৃত্যুদন্ড, নয়জনকে যাবজ্জীবন এবং পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। গতকাল কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন। কুমিল্লা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম সেলিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ রায়ে চৌদ্দগ্রামে খুশির আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কুলাসার গ্রামের আশ্রাফ আলীর ছেলে ইসমাইল হোসেন বাচ্চু (৫৫), আলকরা গ্রামের মোহাম্মদ উল্ল্যাহর ছেলে আবদুর রহমান, শিলরী গ্রামের মৃত তজু মিয়ার ছেলে মফিজুর রহমান খন্দকার (৪২), কেন্দুয়া গ্রামের মৃত আবদুল গোরফানের ছেলে জিয়াউদ্দিন শিমুল (৪২), শিলরী গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে জাহিদ বিন শুভ (২৮), আলকরার নাজির আহমদের ছেলে রেজাউল করিম বাবলু (৩৮) ও উত্তর শর্শদীর শহীদ উল্লাহর ছেলে মো. আমির হোসেন (২৭)। যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আলকরার তাজুল ইসলামের ছেলে নুরুল আলম (৩৩), নুরুল ইসলামের ছেলে কফিল উদ্দিন (২৭), শিলরী গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে নুরুন্নবী সুজন (২৭), কুলাসার গ্রামের শামসুল হকের ছেলে ইকবাল আহাম্মদ (২৭) ও নুরুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শিলরীর মৃত তজু মিয়ার ছেলে মাহফুজুর রহমান খন্দকার (২৮), কুলাসার গ্রামের মৃত ইসমাইল ভেন্ডারের ছেলে। মো. মোশাররফ হোসেন (৪৫), নোয়াবাদ গ্রামের মৃত মোস্তফা ড্রাইভারের ছেলে মো. আলাউদ্দিন (৪০) ও  আশফালিয়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মো. আলী হোসেন (৩৩)। খালাসপ্রাপ্ত হলেন- ভাজনকরার নজির আহমেদের ছেলে নজরুল ইসলাম শিমুল (২৭), ভাজনকরার মনির ড্রাইভারের ছেলে মো. আজিম উদ্দিন (২৮), ভাজকরার মীর হোসেনের ছেলে আনোয়ার হোসেন সোহেল (৩৩), শিলরী আবদুল মালেকের ছেলে আতিকুর রহমান নান্টু (২৬) ও কুলাসার গ্রামের মৃত লোকমানের ছেলে ইউসুফ হারুন মামুন (৪২)। মামলার বিবরণে জানা যায়, মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে প্রতিবাদ করায় ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি দিবাগত রাত ৮টায় প্রধান আসামি আলকরা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল হোসেন বাচ্চুসহ অন্য আসামিরা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি ও বাস মালিক জামাল উদ্দিনকে ডেকে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম পদুয়া রাস্তার মাথায় প্রথমে গুলি, পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করেন।

এ ব্যাপারে ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারি নিহত জামাল উদ্দিনের বড় বোন জোহরা আক্তার (৪৭) বাদী হয়ে ইসমাইল হোসেন বাচ্চুসহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ হোছাইনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৬ সালের ১৮ এপ্রিল প্রধান আসামি ইসমাইল হোসেন বাচ্চুসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে নয়জনকে মৃত্যুদন্ড এবং সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। অন্য নয়জনকে যাবজ্জীবন এবং সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। রায় ঘোষণাকালে আদালত কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. আলী হোসেন। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন। এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্ত কৌঁসুলি এপিপি মো. জাকির হোসেন বলেন, আমি আশাবাদী উচ্চ আদালত রায় বহাল রেখে শিগগিরই কার্যকর করবেন। নিহতের বড় বোন জোহরা আক্তার ও ছাবেরা আক্তার বলেন, আমরা এ রায়ে খুশি। আসামি বাচ্চুসহ অন্যরা খুবই প্রভাবশালী। পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করে দ্রুত রায় কার্যকরের আবেদন জানাচ্ছি।

সর্বশেষ খবর