বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

চা-পান বিক্রেতার কাছ থেকে দান নিয়ে সম্পদ বৈধ করার চেষ্টা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

অবৈধ সম্পদকে বৈধতা দিতে ভিন্ন এক কৌশল অবলম্বন করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মজিবুর রহমান সিকদার। চা বিক্রেতা, পান বিক্রেতা, মুদি দোকানদার, কাঠমিস্ত্রি, কৃষক এবং প্রবাসী শ্রমিকের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের ২০৩.৫ শতাংশ জমি দান নিয়েছেন ওই প্রকৌশলী। যারা তাকে এসব জমি দান করেছেন, তারা কেউই তার রক্ত-সম্পর্কীয় আত্মীয় নন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রকৌশলী মজিবুর রহমান সিকদারের বিরুদ্ধে গতকাল দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার। দুদক জানায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মজিবুর রহমান সিকদার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে। রমনার সিদ্ধেশ্বরী রোডে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অবসরকালীন ছুটিতে যাওয়া মজিবুর রহমান সিকদার অবৈধ আয়কে বৈধ করার জন্য ১৮টি দলিল মূলে চা বিক্রেতা, পান বিক্রেতা, মুদি দোকানদার, কাঠমিস্ত্রি, কৃষক এবং প্রবাসী শ্রমিকের কাছ থেকে হেবা এওয়াজনামা দলিলের মাধ্যমে ১ কোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকা মূল্যের ২০৩.৫ শতাংশ জমি দান হিসেবে গ্রহণ করেন। অথচ দলিল দাতাদের সঙ্গে মজিবুর রহমানের রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই। দলিলদাতা এবং দলিল গ্রহীতার আর্থিক অবস্থা বিবেচনা, গৃহীত বক্তব্যের আলোকে ওই হেবা এওয়াজ দলিল গ্রহণযোগ্য নয়।

অন্যদিকে ভুয়া রেকর্ডপত্র দেখিয়ে মৎস্য খামার থেকে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৪০ হাজার ২৫৭ টাকা আয় দেখালেও এর সমর্থনে যথাযথ রেকর্ডপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। এসব কারণে প্রকৌশলী মজিবুর রহমান সিকদারের বিরুদ্ধে সব মিলিয়ে মোট ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামি মজিবুর রহমান সিকদার সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পদ বাবদ ১০ কোটি ৭৮ লাখ ৯০ হাজার ৯৩৬ টাকার ঘোষণা দেন। যাচাইকালে তার নামে মোট স্থাবর সম্পদ ১২ কোটি ২ লাখ ৯৪ হাজার ৯৩৬ টাকার তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ বাকি ১ কোটি ২৪ লাখ ৪ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। অন্যদিকে অনুসন্ধানে ব্যয়সহ প্রাপ্ত নিট ১২ কোটি ৮৬ লাখ ৩৬ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য পায় দুদক। যার মধ্যে ৮ কোটি ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪৭৭ সম্পদের বৈধ উৎস পাওয়া যায়। বাকি ৪ কোটি ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৫২৮ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ খবর