শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা
সংসদ অধিবেশন

দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চান এমপিরা

বেনজীর মতিউরের ভয়ে প্রতীয়মান হয় তারা দুর্নীতিগ্রস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চান এমপিরা

প্রস্তাবিত বাজেট অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ও দারিদ্র্যমোচনে সহায়ক হবে বলে মনে করেন অধিকাংশ সংসদ সদস্য। তবে বাজেটের সুফল পুরোপুরি পেতে ও দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে লাগামহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের ওপর গতকাল সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা ব্যাংক লুটেরা, অর্থ পাচারকারী ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ব্যাংক লুট, বিদেশে অর্থ পাচার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এ অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলে শেখ হাসিনা মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদকেও ছাড়িয়ে যাবেন। এ কথা স্বীকার করতেই হবে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা কেন আইনকে ভয় পেয়ে বিদেশে চলে যায়? কেন বেনজীর সাহেব বা ছাগলকান্ডের সেই কর্মকর্তা- তারা কেন আইনকে ভয় পান? তারা আইনকে ভয় পান বলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।

প্রস্তাবিত বাজেটকে ইতিবাচক উল্লেখ করে সিলেট-৫ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী বলেন, যারা বাজেট বাস্তবায়ন করবেন, তাদের দুর্নীতিমুক্ত রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। এনবিআর, দুদক-এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে আস্থাশীল ও স্বচ্ছ না করতে পারলে অগ্রসর হওয়া যাবে না। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এর মাধ্যমে যেন দুর্নীতি উৎসাহিত না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বরগুনা-১ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, এ বাজেট বাস্তবায়িত হলে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক সংস্কার। বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান পাঁচ শর নিচে। হাতেগোনা দু-একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাদে বাকিগুলোয় কী পড়ানো হয়, কী সার্টিফিকেট দেওয়া হয় খতিয়ে দেখা দরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বড় বাধা সীমাহীন দুর্নীতি। অধঃপতনেরও একটা সীমা আছে। পত্রিকায় দেখলাম, বিসিএস তথ্য ক্যাডারের এক কর্মকর্তা পদত্যাগ করে যোগ দিয়েছেন নন ক্যাডারের সাব-রেজিস্ট্রার পদে। কী আছে এ সাব-রেজিস্ট্রার পদে? দুর্নীতিবিরোধী অভিযান জোরদারের আহ্বান জানিয়ে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অনেক আইন আছে। কিন্তু আইনের দৃশ্যমান বাস্তবায়ন নেই। টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সংসদ সদস্য আরমা দত্ত বলেন, কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছেন। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে হবে। অর্থমন্ত্রী এজন্য পরিকল্পনা নিয়েছেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী যে মডেল নিয়েছেন একই মডেল যুক্তরাষ্ট্র অনুসরণ করে পাঁচ বছরেও সফল হয়নি। মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য দেওয়ান জাহিদ আহমেদ বলেন, মানিকগঞ্জের সবজি ঢাকা শহরের চাহিদার বড় অংশ পূরণ করে। কিন্তু শহীদ রফিক সেতুর টোলের কারণে পণ্যমূল্য বেড়ে যায়। এত ছোট সেতুর ওপর আর কোথাও টোল আছে কি না জানা নেই। ২৩ বছর ধরে এ সেতুতে টোল দিয়ে যাচ্ছে জনগণ। এটি বন্ধ করা দরকার। সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, যেভাবেই হোক দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানতে হবে। সিন্ডিকেটের কথা সবাই স্বীকার করছে; কিন্তু চেষ্টা করেও সিন্ডিকেটকে ধরা যাচ্ছে না। এটি ধরতে হবে।

সর্বশেষ খবর