শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
প্রধানমন্ত্রী এখন বেইজিংয়ে

চীনের সঙ্গে কী চাওয়াপাওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

চীনের সঙ্গে কী চাওয়াপাওয়া

চীনের বেইজিংয়ে পৌঁছালে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রেড কার্পেট সম্মাননা ও গার্ড অব অনার -পিআইডি

গুরুত্বপূর্ণ এক দ্বিপক্ষীয় সফরে চীনের রাজধানী বেইজিং গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টা) প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইট বেইজিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান চীন সরকারের একজন ভাইস মিনিস্টার। এ সময় শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী চীনে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর বিভিন্ন কারণে পেয়েছে বিশেষ মাত্রা। চার দিনের সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ২০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে। পাশাপাশি উদ্বোধন হতে পারে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সফরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য, আর্থিক সহায়তা এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীনের সহায়তা প্রত্যাশা করা হবে। পাশাপাশি বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন প্ল্যাটফরমে বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ চীনের প্রতি সমর্থন দিয়ে যাবে। সফরসূচি অনুসারে, আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন। এরপর প্রধানমন্ত্রী বেইজিংয়ের সাংগ্রি-লা সার্কেলে চীনের ওয়ার্ল্ড সামিট উইংয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধাবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। বিকালে বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে প্রধানমন্ত্রী ও কনসালটেটিভ পার্টির প্রেসিডেন্ট মি ওয়াংয়ের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পরে তিয়েন আনমেন স্কয়ারে পিপলস হিরোদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সন্ধ্যায় তিনি বেইজিংয়ে বাংলাদেশ হাউসে তাঁর সম্মানে সেদেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজিত এক নৈশভোজে যোগ দেবেন। আগামীকাল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রিমিয়ার লি কিয়াংয়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক গ্রেট হল অব দ্য পিপলে অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)-সহ বেশ কিছু নথিতে স্বাক্ষর করা হবে। পরে তিনি একই স্থানে চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রিমিয়ার আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজসভায় যোগ দেবেন। বিকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। চীন সফর শেষে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে বেইজিং সময় ১১ জুলাই বেলা ১১টা ৫ মিনিটে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। ফ্লাইটটি একই দিন বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।

ঢাকা ও বেইজিংয়ের কূটনৈতিক সূত্র জানায়, দুই দেশের সরকারপ্রধানের উপস্থিতিতে প্রায় ২০টির মতো সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে এবং কিছু প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণা দেওয়া হবে। অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাত, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল ইকোনমি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহায়তা, ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ নির্মাণ, বাংলাদেশ হতে কৃষিপণ্য রপ্তানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পিপল টু পিপল কানেকটিভিটি প্রভৃতি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। চীনের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আছে। চায়না আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। অবশ্যই এ সফর আমাদের সেই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী ও বিস্তৃত করবে। প্রধানমন্ত্রীর সফরে উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা গুরুত্ব পাবে।

 

 

 

সর্বশেষ খবর