সোমবার, ২২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

আন্দোলনকারীরা যা বললেন

আজ গায়েবানা জানাজা, শাটডাউন প্রত্যাহার, কারফিউ বাতিলের দাবি

সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের রায়ের পর সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের সঙ্গে বিচার বিভাগের সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছেন তারা। আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের হত্যাকারীদের বিচার দাবির পাশাপাশি আট দফা দ্রুত বাস্তবায়নে আজ গায়েবানা জানাজা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

গতকাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল কাদেরের পাঠানো এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। এতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির যথেষ্ট সুযোগ আছে। ভবিষ্যতে কোটার পরিমাণ নিয়ে সরকারের যথেচ্ছ ব্যবহারের সুযোগ আছে। এজন্য জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে কোটা সংক্রান্ত আইন পাস করতে হবে। সহ-সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, আপিল বিভাগের রায় নিয়ে আমাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। বিচার বিভাগের সঙ্গে আমাদের আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে আমরা এই রায়কে ইতিবাচকভাবে দেখছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা ইস্যুতে আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন তাতে আমরা সন্তুষ্ট। তবে আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতে পারছি না। এ নিয়ে আমরা শঙ্কায় রয়েছি। সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলে এবং ক্লাস-পরীক্ষাসহ শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে আমরা অফিশিয়ালি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করব। এ ছাড়া অন্য দাবিগুলোও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা। এ ছাড়া আপিল বিভাগের রায়ের পর তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুর রশিদ জিতু সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দাবি ছিল সরকারি চাকরির সব গ্রেডে কোটা শতকরা ৫ ভাগে নামিয়ে আনা। কিন্তু আপিল

বিভাগ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা সংস্কারের রায় দিয়েছেন। এ ছাড়া বর্তমানে আমাদের আট দফা দাবির আন্দোলন চলছে। সব দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবৈধ উপায়ে ব্যবহার করে ছাত্র হত্যার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে মন্ত্রিসভা এবং দল থেকে পদত্যাগ করতে হবে। ঢাকাসহ যেসব স্থানে ছাত্র নিহত হয়েছে সেসব এলাকার ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে। পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ যারা শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা করছে তাদের আটক করে তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করতে হবে। নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগসহ লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হলসমূহ খুলে দিতে হবে এবং আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও রাজনৈতিক হয়রানি বন্ধের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।

এদিকে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কারফিউ তুলে দেওয়ার ও ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করার দাবি জানিয়েছে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান। গতকাল ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সমন্বয়ক নাহিদ হাসানকে দেখতে গিয়ে আরেক সমস্বয়ক সারজিস আলম গণমাধ্যমে এ দাবির কথা জানান।

সর্বশেষ খবর