সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

ভারতীয় গণমাধ্যমে শেখ হাসিনা যা বললেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর নীরবতা ভাঙলেন। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়ার পর তিনি বর্তমানে রয়েছেন ভারতে। শেখ হাসিনার অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশি শক্তি তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পেছনে রয়েছে। ভারত সরকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের পেছনে বিদেশি শক্তি থাকার সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করার কথা বলার কদিন পরই তার এ অভিযোগ এলো। আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া এক বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকাকে সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগর দিয়ে দিলে আমি ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। বার্তাটি ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য প্রিন্টও পেয়েছে। অনেক বছর ধরেই শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের তিক্ত সম্পর্ক চলছে। চলতি বছরের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, এক ‘শ্বেতাঙ্গ’ ব্যক্তি একটি বিমানঘাঁটির বিনিময়ে তাকে ক্ষমতায় মসৃণ প্রত্যাবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এ ধরনের বিদেশি শক্তির দ্বারা ‘ব্যবহৃত’ না হওয়ার জন্য নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকা শেখ হাসিনা। ৫ আগস্ট পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। তিনি দেশ থেকে পালানোর পর সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জানান, তিনি পদত্যাগ করেছেন। এর পর ৮ আগস্ট রাতে ১৭ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেয়। শেখ হাসিনা বার্তায় বলেন, লাশের মিছিল যেন না দেখতে হয়, সে জন্য পদত্যাগ করেছি। তারা (ছাত্রদের) লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। আমি তা হতে দিইনি। শেখ হাসিনা আরও বলেন, তিনি দেশে থাকলে হয়তো আরও প্রাণহানি হতো। আরও অনেক সম্পদহানি হতো। কয়েক সপ্তাহ ধরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ছাত্রদের বিক্ষোভে ৩ শতাধিক প্রাণহানি ঘটে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ অন্যান্য দেশ ছাত্রদের প্রাণহানির তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। ওয়াশিংটন আশা প্রকাশ করেছে, নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।’ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে রয়েছেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকারী।

‘আমি শিগগিরই ফিরে আসব’ : সমর্থক ও দলের নেতাদের উদ্দেশে দেওয়া বার্তায় শেখ হাসিনা পরাজয় মেনে নিয়ে দেশে ফেরার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমি শিগগিরই ফিরব, ইনশাল্লাহ। এ পরাজয় আমার, তবে জয় বাংলাদেশের মানুষের। তিনি বলেন, আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। আপনারা সহযোগিতা করেছিলেন বলে আমি ছিলাম। আপনারা ছিলেন আমার শক্তি। আপনারা আমাকে আর চাননি। তাই আমি সরে এসেছি, পদত্যাগ করেছি। আমার যারা কর্মী আছেন, কেউ মনোবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার কথা বিকৃত করার অভিযোগও তুলেছেন। বার্তায় তিনি বলেন, আমি তরুণ শিক্ষার্থীদের আবারও বলতে চাই, আমি তোমাদের রাজাকার বলিনি... আমার কথা বিকৃত করা হয়েছে। ‘রাজাকার’ শব্দটি বাংলাদেশে অবমাননাকর বলে বিবেচিত হয়। কারণ, এটি তাদেরই নির্দেশ করে, যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করেছিলেন।

সর্বশেষ খবর