শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বর্ষার কেশকেয়ার

সাদিয়া সারা

বর্ষার কেশকেয়ার

♦ মডেল : টয়া ♦ ছবি : ফ্রাইডে

প্যাচপ্যাচে বৃষ্টি আর ভেজা আবহাওয়া। হঠাৎ হঠাৎ তাপমাত্রার ওঠানামা। বৃষ্টিস্নাত আবহাওয়ার কারণে চুল শুকানো দায়। তার ওপর চুল পড়ে যাওয়া, চুলের আর্দ্রতা হারানো নিয়ে কপালে পড়ে চিন্তার ভাঁজ।  এ সময় চুলের খেয়াল রাখবেন কেমন করে? দেখে নিন, বুঝে নিন।

 

এ সময় হঠাৎ তাপমাত্রা ওঠানামায় চুল হারায় মোহনীয়তা। তাই এ সময় চাই নিয়মিত শ্যাম্পু, কন্ডিশনার এবং হট অয়েল ম্যাসাজ। বৈজ্ঞানিকদের মতে, ‘বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে না ভেজাই ভালো। কারণ সেই পানির সঙ্গে ভেসে বেড়ানো বাতাসের জীবাণুও ঝরে পড়ে। যা চুলের জন্য ক্ষতিকারক। এই স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায়, মাথার ঘাম, চুল ঠিকমতো না শুকানোর কারণে চুলে নানা জীবাণু দেখা দিতে পারে। এসব জীবাণু চুলের গোড়ায় ইনফেকশন, খুশকি, চুল পড়াসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি করে।’

 

আকাঙ্খা’স গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের রূপ বিশেষজ্ঞ ফারনাজ আলম বলেন, ‘বর্ষাকাল ফ্যাশন-সচেতন নারীদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। এ সময় চুলের অযত্ন-অবহেলায় স্ক্যাল্পে বাধে নানা সমস্যা। বৃষ্টির পানি ও ঝড়ো হাওয়া মাথার ত্বককে ধুলোয় ভরিয়ে তোলে। সপ্তাহে অন্তত একবার শ্যাম্পু করার পর স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন লেবুর রস। পাঁচ মিনিট বাদে ধুয়ে ফেলুন। স্ক্যাল্প এবং চুল থেকে ধুলোময়লা বেরিয়ে যাবে। চুল হবে ঝলমলে।’

 

বর্ষায় চুলের যত্ন

বর্ষাকালে চুল শুষ্ক, রুক্ষ হয়ে ওঠা কিংবা চুল পড়ার মতো সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। কারও চুল আবার তৈলাক্ত হয়ে পড়ে অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে। এসব থেকে মুক্তি পেতে চুলের গোড়া পরিষ্কার রাখা দরকার। চুল ধোয়ার ক্ষেত্রে এ সময় মাইলন্ড শ্যাম্পু আদর্শ। আর সপ্তাহে অন্তত দুই দিন চুল ধোয়া চাই-ই চাই। আবার শ্যাম্পু করার আগে হট তেল ম্যাসাজ করতে পারলে ভালো। ভালো ম্যাসাজের জন্য দু-তিন রকমের তেল মিশিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন। যেমন— আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল এবং নারিকেল তেল। মাথায় ভালো করে ম্যাসাজ করে সারা রাত রেখে দিন। পরের দিন শ্যাম্পু করে নিন। চুলের হারানো আর্দ্রতা অবশ্যই ফিরে আসবে।

 

চুলের প্রাত্যহিক যত্ন

বর্ষায় বৃষ্টিতে চুল ভিজে গেলে দ্রুত শুকিয়ে ফেলুন। একইভাবে গোসলের পর চুল শুকিয়ে ফেলতে হবে। বর্ষায় বাজারের কেমিক্যালযুক্ত পোডাক্ট  যথাসম্ভব কম ব্যবহার করুন। এ সময় হেয়ার স্প্রে থেকে বিরত থাকুন। বর্ষাকালে চুলে কালার এবং হিট একদমই দেবেন না। তা ছাড়া খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন করতে হবে। তেলের খাবার একেবারেই কম খান এবং প্রচুর পানি পান করুন। যাদের রঙিন চুল তারা তেলের সঙ্গে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল মিলিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। শ্যাম্পু ও ডিপ কন্ডিশন করুন। সপ্তাহে একবার নিউটিলাইজার ক্রিম ব্যবহার করুন।

 

চুল পড়া ও খুশকি রোধে

এ সময় চুল পড়া ঠেকানোর উপায় রয়েছে। এক কাপ মধু, এক কাপ আমন্ড অয়েল আর এক কাপ গুঁড়া কেমোমাইল পাতা মিশিয়ে নিন। পরিমাণ মতো চুলে লাগিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিন। মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার ব্যবহার করলে মাসখানেক পরেই তফাত্টা বুঝতে পারবেন। নারিকেল তেল ও লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে মিলবে খুশকি থেকে পরিত্রাণ। ঘণ্টাখানেক পর মাথায় জড়িয়ে নিন গরম পানিতে ভেজানো তোয়ালে। পরে চুল ধুয়ে ফেলুন।

 

জেনে রাখুন

♦  এ সময় ঘামে ভেজা ও চিটচিটে স্ক্যাল্পের সমস্যা বেশি থাকে। এ জন্য সপ্তাহে দুই দিন শ্যাম্পু করা ভালো।

♦  নরম তোয়ালে দিয়ে চুল মুছবেন, ফলে চুল কম উঠবে।

♦  খুব টাইট করে চুল বাঁধবেন না।

♦  সবসময় মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করবেন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি মোটা দাঁতের কাঠের চিরুনি ব্যবহার করেন।

♦  হেয়ার স্টাইলের আদর্শ সময় বর্ষা। তাই যে কোনো স্টাইলিশ শর্ট হেয়ারকাটস ট্রাই করতে পারেন।

 

চুলের ঘরোয়া টোটকা

♦  হট অয়েল ম্যাসাজ, মজবুত আর ঘন কেশের মূলমন্ত্র। এটা স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। ফলে চুল পড়া কমে ও চুল হয়ে ওঠে ঝরঝরে ও চকচকে। এক্ষেত্রে আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল, আমলা অয়েল এবং নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত এক দিন ব্যবহারেই যথেষ্ট।

  চুলের পুষ্টিতে মেথি অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস প্রোটিন। এটি স্ক্যাল্পে পুষ্টি জুগিয়ে চুলকে করে সুন্দর। মেথি সারা রাত ভিজিয়ে সকালে পেস্ট করে স্ক্যাল্পে ৪০ মিনিট লাগিয়ে রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন।

♦  চুল পড়া কমা এবং চুলের বৃদ্ধিতে পিয়াজের রস ঝটপট সমাধান। এ জন্য কয়েক টুকরো পিয়াজ ভালো করে পেস্ট করে রস বের করে নিন। এই পিয়াজের রস চুলের স্ক্যাল্পে  লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

 

ঘরোয়া টোটকা তো রয়েছেই!  তবে ফুর্তিতে মাততে দেরি কিসের?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর