পাইলটবিহীন বিমান বা ড্রোন হামলার কারণে বিশ্ব নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হয়ে উঠেছে। এমন মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, মার্কিন ড্রোন হামলার কারণে বিশ্বের আরও বহু দেশ এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। বিচারবহিভর্ূত হত্যাকাণ্ডবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টফার হেইন্স সংস্থাটির সাধারণ পরিষদের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান। যুক্তরাষ্ট্রসহ যেসব দেশ ড্রোন হামলা চালায় তাদের এ ধরনের হামলার ব্যাপারে আরও স্বচ্ছ এবং কীভাবে, কাদের ওপর হামলা চালানো হলো তার খুঁটিনাটি জনসম্মুখে প্রকাশ করার আহ্বান জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। গতকাল টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভাষ্যমতে, ড্রোন হামলায় যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানায় বাস্তবে তার চেয়ে আরও অনেক মানুষ মারা যায়। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখন বহু দেশ ড্রোন তৈরির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এসব দেশ যদি অন্য দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে ব্যাপক মাত্রায় ড্রোন হামলা চালানো শুরু করে তাহলে বিশ্বে নিরাপত্তা বলতে আর কিছু থাকবে না। বর্তমানে ড্রোন হামলা চালানোর ক্ষেত্রে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি বিবেচনা করে লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। এ হামলা চালানোর ক্ষেত্রে মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। এতে বলা হয়েছে, ড্রোন দিয়ে চালানো হামলায় বিপুলসংখ্যক নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে। ড্রোন পরিচালনাকারী দেশগুলো নিখুঁতভাবে শুধু সন্ত্রাসীদের ওপরই হামলা চালানোর দাবি করলেও বাস্তবে অতটা নিখুঁতভাবে হামলা চালানো যাচ্ছে না। এ ছাড়া পাইলটবিহীন বিমান দিয়ে সন্ত্রাসী এবং নিরপরাধ মানুষকে শনাক্ত করা মোটেও সম্ভব নয়। কাজেই এ ধরনের হামলায় নিরীহ মানুষ নির্বিচারে মারা পড়ছে বলে ওই প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। আগামী ২৫ অক্টোবর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ প্রতিবেদনের ওপর আলোচনা হবে। এ ছাড়া জাতিসংঘের কাউন্টার-টেররিজমবিষয়ক বিশেষ দূত বেন এমারসনের একটি প্রতিবেদনও আগামী সপ্তাহে প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিবিসি, আল জাজিরা।