শিরোনাম
শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
বিবিসি বাংলার বিশ্লেষণ

নোট অচলের জেরে কি মূল্য দিতে হবে মোদিকে?

নোট অচলের জেরে কি মূল্য দিতে হবে মোদিকে?

ভারতে গত সপ্তাহে হঠাৎ করে বাতিল ঘোষণা করে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট। ওই ঘোষণার পর থেকে  গোটা ভারত জুড়ে মানুষের হাতে থাকা বাতিল নোট বদলের প্রকৃয়া। কিন্তু তা করতে গিয়ে হাজারও সমস্যায় পড়ছে মানুষ। এ ঘটনায় নানা অপ্রীতিকর ঘটনা এমন কী আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যদিও বলছেন কালো টাকার কারবারিদের কাবু করতেই এই পদক্ষেপ। কিন্তু বাস্তবে প্রথম কয়েক দিনে কিন্তু ভারতের সাধারণ মানুষ, ছোট ব্যবসায়ী কিংবা শ্রমিক-কর্মচারীরাই এই সিদ্ধান্তের জেরে সবচেয়ে বেশি নাকাল হচ্ছেন। তাদের দুর্ভোগকে পুঁজি করে বিরোধী দলগুলোও এখন আন্দোলনে নেমেছে সরকারের বিরুদ্ধে। কিন্তু এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরকার কী যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামেনি? এর প্রভাবে কী হতে পারে নরেন্দ্র মোদির ভবিষ্যৎ তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। এই পদক্ষেপের জেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কি চরম রাজনৈতিক মূল্য দিতে হতে পারে?

৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেন সেদিন মধ্যরাতের পর থেকেই দেশে ৫০০ আর হাজার টাকার রুপি বাতিল হয়ে যাচ্ছে, ব্যাংকে জমা না পড়লে সেগুলোর মূল্য বাজে কাগজের টুকরোর চেয়ে বেশি কিছু নয়। প্রধানমন্ত্রী জানান, দুর্নীতিগ্রস্ত কালো টাকার মজুতদারদের নিশানা করেই এই পদক্ষেপ। কিন্তু পরদিন সকাল থেকে সারা দেশে যে নৈরাজ্য শুরু হয়েছে, তাতে সবচেয়ে বেশি নাকাল হতে লাগলেন সাধারণ মানুষ, বাজারের ছোট দোকানদার কিংবা দিন-এনে দিন-খাওয়া মেহনতি মানুষজন, যাদের রুটিরুজির অর্থনীতি এখনো পুরোপুরি ‘নগদ নির্ভর’। কিন্তু মানুষের এমন চরম ভোগান্তি হবে জেনেও প্রধানমন্ত্রী মোদি কেন কোনো আগাম সতর্কতা ছাড়াই এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিতে গেলেন? আর যদি বা নিলেন, তার ধাক্কা সামলানোর মতো প্রস্তুতি কেন নেওয়া গেল না?

দিল্লির বরিষ্ঠ রাজনৈতিক বিশ্লেষক জয়ন্ত ঘোষাল এ প্রশ্নের জবাবে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, এই সিদ্ধান্তটা উনি কাউকে না জানিয়ে নিয়েছেন কারণ সেটা না করলে যারা এই আক্রমণের নিশানা, সেই কালো টাকার মজুতদাররা হয়তো সাবধান হওয়ার সুযোগ পেয়ে যেতেন... সেই টাকা পাচার করে দিত বা হাওয়ালা করে দিত। প্রধানমন্ত্রী সেই গোপনীয়তা রক্ষা করেছেন ঠিকই, কিন্তু তা করতে গিয়ে দেশের অবকাঠামো এর জন্য প্রস্তুত কি না সেটা বুঝতে পারেননি। এর আগে যখন ১৯৭৮ সালে মোরারজি দেশাই অনুরূপ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন—সে আমলে এত এটিএম মেশিন বা প্লাস্টিক কার্ড ছিল না, কিন্তু তারপরও সরকার পরিস্থিতি সামলাতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিল— এরকম নৈরাজ্য হয়নি।”

কি মূল্য দিতে হবে নরেন্দ্র মোদিকে : বিশ্লেষকরা বলছেন—নরেন্দ্র মোদির আসল টার্গেট হলেন মুলায়েম সিং যাদব ও মায়াবতীর মতো নেতারা—উত্তরপ্রদেশে আসন্ন নির্বাচনের আগে যারা হাজার হাজার কোটি টাকা জড়ো করেছিলেন বলে অভিযোগ। এই জল্পনায় সত্যতা যতটাই থাক, নরেন্দ্র মোদি যে বিরাট একটা রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়েছেন তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই জয়ন্ত ঘোষালের।

সর্বশেষ খবর