চীনা শব্দ তিয়াংগং। বাংলা অর্থ ‘স্বর্গের প্রাসাদ’। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পর আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন বা আইএসএস)-এর আদলে পৃথিবীর কক্ষপথে নিজস্ব একটি ‘স্পেস স্টেশন’ তৈরি করেছিল চীন। ২০১১ সালে পৃথিবীর কক্ষপথে তারা পাঠিয়েছিল কৃত্রিম উপগ্রহ ‘তিয়াংগং-১’। সম্প্রতি পাঠানো হয় দ্বিতীয় উপগ্রহটি ‘তিয়াংগং-২’। কিন্তু সে দেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, ‘তিয়াংগং-১’-এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে চীনা উপগ্রহটি। ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইএসএ) জানিয়েছে, সাড়ে আট টন ওজনের মহাকাশযানটি আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে ভেঙে পড়বে। এ ক্ষেত্রে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্য, স্পেন ও ইতালিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশ। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্য, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশও রয়েছে এই তালিকায়। তবে আশার কথা, উপগ্রহটি আকারে বেশ ছোট। ওজন সোয়া সাত মেট্রিক টনের মতো। বিজ্ঞানীদের মতে, বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে ঘর্ষণে হয়তো ‘তিয়াংগং-১’-এর ধ্বংসস্তূপের সম্পূর্ণটাই পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। যদি বা ওই ‘স্পেস ল্যাব’-এর কিছু বেঁচে থাকে, সঙ্কুচিত হয়ে তা একেবারে ছোট্ট আকার নেবে। আশঙ্কা অবশ্য একটা থাকছেই। আকারে একেবারে ছোট হয়ে গেলেও, সে যে বুলেটের গতিতে ছুটে আসছে! জনবসতিকে তা পড়লে প্রাণনাশেরও সম্ভাবনা থাকছে। তবে স্বর্গপ্রাসাদ যে এত তাড়াতাড়ি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়বে, কল্পনাও করেনি চীন। মানুষ ছাড়াই মহাকাশে পাঠানো হলেও, আইএসএস-এর মতো মানুষ পাঠানোর বন্দোবস্ত ছিল তিয়াংগং ১-এও। চীনের আশা ছিল, তাদের মহাকাশ গবেষণাগারটিই ভবিষ্যতে নভশ্চরদের আন্তর্জাতিক ঘাঁটি হয়ে উঠবে। সম্প্রতি মহাকাশে তিয়াংগং-২ পাঠিয়েছে চীন। পোল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, চীনের মিলিত উদ্যোগে তৈরি এই কৃত্রিম উপগ্রহটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৯৩ কিলোমিটার উপরে পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরছে। অনলাইন।