বুধবার, ৩ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাদ পড়েছেন মুসলিম ছাত্র সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদকও

আসামে দ্বিতীয় তালিকা ২০ ফেব্রুয়ারি

প্রতিদিন ডেস্ক

আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি আসাম রাজ্য সরকার সেরাজ্যে নাগরিকদের দ্বিতীয় তালিকার খসড়া প্রকাশ করবে বলে জানিয়েছে আসাম ট্রিবিউন নামের গণমাধ্যম। এছাড়া  নতুন  নতুন এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন অল আসাম মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট আজিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আইনুদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া বাদ পড়েছেন অনেক মুসলিম। আর এমন প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় পরিচয়ের বাইরে গিয়ে অসমীয়দের নাগরিকত্ব নির্ধারণের দাবি করছেন অনেকে। স্থানীয় গণমাধ্যগুলোর দাবি, আসামের উত্তরাঞ্চলে বাংলাভাষী মুসলিম বা অভিবাসীর সংখ্যা কম। এ জন্য ওই অঞ্চলে নাগরিকত্ব নির্ধারণের তালিকা দ্রুত করা যাচ্ছে। কিন্তু নিম্নাঞ্চল বা দক্ষিণাঞ্চলের দিকে রয়েছেন প্রচুর বাংলাভাষী মুসলিম। তাদেরকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে দাবি করা হয় স্থানীয়ভাবে। বলা হয়, তারা বাংলাদেশি অভিবাসী। তাদেরকে শনাক্ত করে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য শুরু হয়েছে নাগরিকত্বেও রেজিস্টার হালনাগাদ কার্যক্রম। এরই অংশ হিসেবে রবিবার রাতে প্রথম খসড়া তালিকাটি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে ও পরে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, এ প্রক্রিয়ায় অবৈধ হতে পারেন ৩০ থেকে ৪০ লাখ মুসলিম এবং তাদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে। স্থানীয় রাভা জাতিগোষ্ঠীর এক নাগরিক অজিত রাভা (৪৯) বলেন, বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী শনাক্ত করতে গিয়ে এনআরসি আধুনিকায়ন করার সময় তা ধর্মের ভিত্তিতে হওয়া উচিত নয়। এমনিতেই ভারত ঘোষণা দিয়েছে, তারা হিন্দু অভিবাসীদেও বৈধতা দেবে। আসামের রাভা ও অন্যান্য আদি জাতিগোষ্ঠী সম্প্র্রদায় নিজেদেরকে ভূমিপুত্র হিসেবে পরিচয় দেয়। তারা এ বিষয়ে সচেতন যে, ২০১৬ সালের প্রস্তাবিত নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনী পাস হলে তার আওতায় হিন্দু অভিবাসীরা বৈধতা পাবেন। অজিত রাভা গোয়ালপাড়ার শালপাড়ার একজন ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, এনআরসি নবায়নের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই আমরা। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ বা যেকোনো জাতিসত্ত্বার ক্ষেত্রে একই নীতি গ্রহণ করা উচিত সরকারের। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, দৃশ্যত ক্ষমতাসীন বিজেপি দ্বিমুখী আচরণ করছে। তারা মুসলিমদেরকে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে হিন্দুদেও দেশভাগের সময়ে ধর্মীয় কারণে নির্যাতিত শরণার্থী হিসেবে দেখছে। এনআরসি নিয়ে তাই আসামের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। করবি উপজাতির সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী করবি কালচারাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট চন্দ্রসিং ক্রো একটি সঠিক তালিকার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে নাগরিকত্ব বিষয়ক একটি সরকারি এনআরসি পাব আমরা। তাতে থাকবে না অভিবাসীদের নাম। এখানে উল্লেখ্য, বাংলাদেশি অভিবাসী হিসেবে যাদেরকে দায়ী করছে আসাম তাদের বিরুদ্ধে তাদের প্রধান ক্ষোভ হলো অর্থনৈতিক। এ খাতে তারা ওই সব কথিত অভিবাসীদের কাছে পরাজিত হচ্ছে। এটাই রাভা ও অন্য উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রধান সমস্যা। এ ছাড়া আসামে মুসলিম অভিবাসীদের সংখ্যা বৃদ্ধি এসব সম্প্র্রদায়ের কাছে বড় হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। বোরো উপজাতির সদস্য প্রমোদ বোরো। তিনি অল বোরো স্টুডেন্টস ইউনিয়নের প্রেসিডেন্টও। তিনি বলেন, এনআরসি নিয়ে বোরোরা দ্বিধাদ্বন্দ্ব্বে। যেহেতু সরাসরি সুপ্রিম কোর্টের নজরদারির অধীনে এনআরসি নবায়ন করা হচ্ছে তাই এ নিয়ে আমাদেও কোনো সন্দেহ নেই।

 

 

সর্বশেষ খবর