বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

পুতিন সম্পর্কে নরম মনোভাব দেখিয়ে বেকায়দায় ট্রাম্প

পুতিন সম্পর্কে নরম মনোভাব দেখিয়ে বেকায়দায় ট্রাম্প

রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাবকে আমেরিকার জন্য ‘নির্বুদ্ধিতা’। এই মন্তব্য খোদ আমেরিকানদের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ‘নির্বুদ্ধিতা’ নিয়ে তীব্র সমালোচনা করছেন ট্রাম্পের নিজ দল রিপাবলিকান নেতারা। যদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতির ওপর জোর দিয়েছেন।  এমন ঘটনা কখনোই কল্পনা করা সম্ভব হতো না। শীর্ষ বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে রুশ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট একযোগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাদের কার্যকলাপের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন। সোমবার ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকিতে ঠিক এমনই প্রায় অবিশ্বাস্য ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে গোটা বিশ্ব। ট্রাম্প এবং পুতিন দুজনেই দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনায় বসেন। কিন্তু সব কিছু ছাড়িয়ে আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ। রাশিয়ার এই হস্তক্ষেপের অভিযোগ সম্পর্কে ট্রাম্প বলেছেন, ‘রাশিয়ার মাথা ঘামানোর কোনো কারণ নেই।’ অথচ তার এ মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্যের বিপরীত। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলছে, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাইবার হামলা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ভুয়া সংবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে এ কাজ করেছিল রাশিয়া। কিন্তু এই তথ্য ট্রাম্প প্রত্যাখ্যান করার পর  মার্কিন কংগ্রেসের শীর্ষ রিপাবলিকান সদস্য হাউস স্পিকার পল রায়ান বলেছেন, ‘রাশিয়া আমাদের মিত্র নয়, ট্রাম্পকে এটি বিবেচনায় রাখতে হবে।’ রিপাবলিকান সিনেটর জন ম্যাককেইন ট্রাম্পের এমন মন্তব্যকে ‘অশোভন কাজ’ বলে অভিহিত করেছেন। আর ঘরে-বাইরে প্রবল চাপ সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রকাশ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। তার বদলে তিনি রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে তদন্তের প্রশ্নে নিজের দেশের ‘বোকামি’ নিয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। শীর্ষ বৈঠকের আগেই ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের চরম অবনতির জন্য নিজের দেশকেই দায়ী করেন। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁর এই টুইট বার্তার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে। এমন অভূতপূর্ব ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এমনকি রিপাবলিকান দল ও মার্কিন প্রশাসনের একটা অংশও সেই সমালোচনায় সুর মিলিয়েছে। ন্যাশানাল ইন্টেলিজেন্স প্রধান ড্যান কোটস স্পষ্ট বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্টের মূল্যায়নের সঙ্গে একমত নন। তাঁর মতে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মূল্যায়ন অনুযায়ী ২০১৬ সালের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এবং মার্কিন গণতন্ত্রকে এখনো খর্ব করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। রিপাবলিকান দলের সংসদ সদস্য লিন্ডসে গ্র্যাহাম এক টুইট বার্তায় লেখেন, রাশিয়া মার্কিন প্রেসিডেন্টের জবাবকে দুর্বলতা হিসেবে গণ্য করবে এবং এর ফলে নতুন করে আরও সমস্যা সৃষ্টি হবে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে গভীর রাতে ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতি তাঁর ‘অসাধ’ আস্থা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে অতীত ভুলে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থে বিশ্বের দুই প্রধান পরমাণু অস্ত্রধর দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি। অন্যদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুঝিয়ে দিলেন যে, তিনি শীর্ষ বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলন বেশ উপভোগ করেছেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রশংসাও করেছেন। এমনকি তিনি স্বীকার করেন যে, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পকেই জয়ী দেখতে চেয়েছিলেন। এএফপি, ডয়েচে ভেলে

সর্বশেষ খবর