সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

কাভানার নিয়োগ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল

কাভানার নিয়োগ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল

আমেরিকার সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি হিসেবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মনোনয়ন দিয়েছেন তার পছন্দের ব্যক্তি ব্রেট কাভানাকে। গত শুক্রবারই সেই নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একের পর এক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর সেই নিয়োগ এখন অনেকটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আর তা হলে এটি ট্রাম্পের জন্য একটি ব্যর্থতা হিসেবে মূল্যায়ন হবে। গত বৃহস্পতিবার কাভানার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে শুনানি হয় সিনেটের বিচার বিভাগীয় কমিটিতে। কমিটি সেখানে কাভানার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী অধ্যাপক ক্রিস্টিন ব্লাসি ফোর্ড ও কাভানার বক্তব্য শুনেছেন। বিরোধী ডেমোক্র্যাটরা বারবার দাবি তুলেছিল, বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য এফবিআই দ্বারা একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। সে দাবি অগ্রাহ্য করে কমিটির প্রধান সিনেটর চাক গ্রাসলি শুক্রবার ভোট গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এতে বাগড়া দেন অ্যারিজোনার রিপাবলিকান সিনেটর জেফ ফ্লেক। দুপুরে, কমিটি যখন নিয়োগ প্রশ্নে ভোট গ্রহণে প্রস্তুত, বিস্মিত সহকর্মীদের ফ্লেক জানালেন, তিনি চান এই প্রশ্নে একটি এফবিআই তদন্ত হোক। আর এরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এফবিআইকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। এর আগে রিপাবলিকান নেতারা এফবিআই তদন্তের সব দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছিল। ঘটনার শুরু মূলত শুক্রবার যখন সকালে কমিটি কক্ষে প্রবেশের জন্য লিফটে প্রবেশ করছিলেন সিনেটর ফ্লেক। তার পথ আটকে দাঁড়ান দুই নারী, যারা উভয়েই যৌন নির্যাতনের শিকার। তারা ফ্লেকের কাছে জানতে চান, যৌন নির্যাতনের স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ার পরও কাভানার মতো একজন মানুষকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়োগ দেওয়া হবে কেন? ফ্লেকের সঙ্গে এই দুই নারীর কথোপকথনের সময় পাশেই ছিল গণমাধ্যম সিএনএনের ক্যামেরাম্যান। পুরো কথোপথনটি সেই ক্যামেরায় ধারণ হয়। এরপর সভা কক্ষে ঢোকেন ফ্লেক। ভোট গ্রহণের আগে ফ্লেক তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর ক্রিস কুনকে সঙ্গে নিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য বেরিয়ে যান। সলাপরামর্শ শেষে ফিরে এসে ফ্লেক নিজের অবস্থান পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। ফ্লেক জানান, তিনি একা নন, আরও একাধিক সিনেটর রয়েছেন যারা এই প্রশ্নে এখনো দ্বিধায় রয়েছেন, তারাও চান তদন্ত হোক। শুক্রবার বিকালের মধ্যেই প্রেসিডেন্টের নির্দেশ মোতাবেক এফবিআইয়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। এটি একটি সীমিত পরিসরের তদন্ত, যেসব বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ উঠেছে, এফবিআই কেবল সেসব অভিযোগ তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন কমিটির হাতে তুলে দেবে। ৩৬ বছর আগে কী ঘটেছিল, এই তথ্য উদঘাটন খুব সহজ নয়। অভিযোগের মধ্য দিয়েই বেরিয়ে আসছে মার্কিন সর্বোচ্চ আদালতে এমন একজন ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন দিয়েছেন যিনি পুরোদস্তুর মদ্যপ। স্কুলে ও কলেজে কাভানা নিজেও অতিরিক্ত মদপান করতেন, এ কথা তার একাধিক সহপাঠী জানিয়েছেন। ভাবা হচ্ছে, এখন এফবিআইয়ের তদন্তে সেসব তথ্যের পাশাপাশি কাভানার জন্য অস্বস্তিকর আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে। যা কাভানাকে বিচারপতি হতে ব্যাপক বাধার সৃষ্টি করবে।

সর্বশেষ খবর