শনিবার, ২০ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

৯৫ দিন পর নিউইয়র্ক সচলের দ্বিতীয় ধাপে

প্রথম ধাপের পর ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রয়েছে। করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকায় আগামী পরশু থেকে দ্বিতীয় ধাপে অর্থাৎ আরও বেশি সেক্টর খুলে দেওয়া হচ্ছে

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

করোনা মহামারীতে বিক্ষত নিউইয়র্ক সিটিতে লকডাউন শিথিলের প্রথম ধাপ শুরু হয়েছে ৮ জুন। দীর্ঘ ৮২ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর ঐ দিন থেকে এই সিটির কন্সট্রাকশন ব্যবসা, কল-কারখানা এবং রাস্তার পার্শ্ববর্তী দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। দোকানে কেনা-কাটার সুযোগ নেই। যারা অনলাইনে অর্ডার দিয়েছেন তারাই শুধু পণ্য পাচ্ছেন। একই অবস্থা পাইকারি স্টোরেও। প্রথম ধাপের পর ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রয়েছে। করোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে কমতে থাকায় আগামী পরশু থেকে দ্বিতীয় ধাপে অর্থাৎ আরও বেশি সেক্টর খুলে দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার এক প্র্রেস ব্রিফিংকালে স্টেট গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো নিউইয়র্কবাসীকে ধন্যবাদ জানান স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য। স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্ধৃতি দিয়ে স্টেট গভর্নর বলেন, সর্বশেষ বুধবার এই সিটিতে মোট ৬৮৫৪১ জনের করোনা টেস্ট হয়েছে। এর মধ্যে পজিটিভ পাওয়া গেছে মাত্র ৬১৮ জনের অর্থাৎ ০.৯% এরও কম। এদিন মারা গেছে ২৯ জন। তবে এর আগের তিন দিনে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৭, ১৮ এবং ২৫। স্টেট গভর্নর বলেন, এই পরিস্থিতি তৈরি করা সম্ভব হয়েছে সবাই আন্তরিক অর্থে মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করায়। প্রথম ধাপের মতো দ্বিতীয় ধাপে পদার্পণের পরও এসব বিধি মেনে চলতে হবে। রেস্টুরেন্টের বারান্দায় বসার ব্যবস্থা করা যাবে মোট জায়গার অর্ধেকে ৬ ফুট অন্তর। ভেতরে বসে খাবারের সুযোগ তৈরী হবে এরও ১৪ দিন পর অর্থাৎ তৃতীয় ধাপে। রেস্টুরেন্টের কর্মচারীরা সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকবেন। গ্রাহকরাও খাবার শুরু পর্যন্ত মাস্ক ব্যবহার করবেন। এ ধাপে অফিস, রিয়েল এস্টেট কোম্পানি, গাড়ির ডিলারশিপের স্টোর খুলবে। তবে সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। অফিসের স্টাফকে বসতে হবে ৬ ফুট অন্তর। স্টোরের কর্মচারী এবং সেবা নিতে আসা লোকজনের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখতে কর্তৃপক্ষকে সজাগ থাকতে হবে।

ইতিপূর্বে স্টেট গভর্নর এক নির্বাহী আদেশে বলেছেন যে, মাস্ক ছাড়া কোনো গ্রাহককে গ্রোসারি, রিটেইল অথবা অন্য যে কোনো দোকানে প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না।

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আগ্রহে যে সব স্টেট আগেই লকডাউন শিথিল করেছে সেগুলোর অধিকাংশকেই এখন খেসারত দিতে হচ্ছে জীবনের বিনিময়ে। অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডা, ওকলাহোমা, অরেগন, টেক্সাস, নেভাডাসহ অন্তত: ১০টি স্টেটে নতুন করে সংক্রমণের হার চরমে উঠেছে। এহেন অবস্থাকে ‘ট্রাম্পের ঐতিহাসিক ভুল’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে এ্যান্ড্রু ক্যুমো বলেন, হোয়াইট হাউসের গড়া করোনাভাইরাসের উপদেষ্টা পরিষদের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণের অনুরোধ উপেক্ষা করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার রাজনৈতিক মতলব হাসিলের দায় চাপিয়েছেন উপরোক্ত স্টেটের সাধারণ নাগরিকের ওপর। তারা এখন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন এবং হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন। কিন্তু নিউইয়র্কসহ আশপাশের স্টেটগুলো ট্রাম্পের ইচ্ছার কাছে সমর্পিত হইনি বলে এখন পর্যন্ত সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

সর্বশেষ খবর