কয়েকটা দেশ নিজেদের মধ্যে ছোট্ট দল তৈরি করে মিলেমিশে দুনিয়া শাসন করবে, সেদিন চলে গেছে। এভাবেই চলতি জি-৭ সম্মেলনের সমালোচনা করল চীন। গত শুক্রবার থেকে ইংল্যান্ডে শুরু হয় তিন দিনের এই সম্মেলন। গতকাল তা শেষ হয়েছে। বিশ্বের বাঘা অর্থনীতির সাত দেশ আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা, ইতালি, ফ্রান্স ও জার্মানির সরকারপ্রধানরা তাতে অংশ নেন। সঙ্গে ছিল ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান। এদিকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য পেশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। যদিও ভারত জি-৭ গোষ্ঠীর সদস্য নয়, তবুও জনসনের বিশেষ আমন্ত্রণে বক্তব্য রেখেছেন মোদি।
তবে সম্মেলনে প্রধান ফোকাস ছিল চীনকে নিয়ন্ত্রণ। চীনের বাড়-বাড়ন্তকে থামিয়ে দেওয়া। চীনের ক্রমেই বেড়ে চলা বৈশ্বিক প্রভাব মোকাবিলা করতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অবকাঠামো সহায়তা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে বিশ্বের শীর্ষ সাত ধনী দেশের জোট জি-৭। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের লক্ষ-কোটি ডলারের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগকে থামিয়ে দিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অবকাঠামো সহায়তা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে জি-৭ নেতারা।
কিন্তু চীন হঠাৎ এই সম্মেলনের ওপরে কেন এত ক্ষুব্ধ হলো? আসলে মনে করা হচ্ছে, আপাত এই জি-৭ সম্মেলনে করোনার মোকাবিলা ও জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষা করার মতো বিষয়ে আলোচনা করা হলেও নেপথ্যে রয়েছে চীন-বিরোধিতায় একত্রিত হওয়ার মঞ্চ নির্মাণ। স্বাভাবিকভাবে এতেই চটেছে বেইজিং। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়া-আমেরিকা ঠান্ডা যুদ্ধের সমাপ্তি হয়। তারপর থেকে গত তিন দশকে ক্রমশই উত্থান হয়েছে চীনের। বিশ্লেষকদের মতে, চীনের এভাবে বিশ্বশক্তির অংশ হয়ে ওঠাই সম্ভবত গত ৩০ বছরে বিশ্ব রাজনীতিতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। আর চীনের এই উত্থানকেই মেনে নিতে পারেনি বিশ্বের উন্নত দেশগুলো। সে কারণে জি-৭ সম্মেলনের সদস্য দেশগুলো চীনের শক্তিকে খর্ব করতে চাইছে। স্বাভাবিকভাবে বিরোধিতার রাস্তায় নেমেছে শি জিন পিংয়ের দেশও।