বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বাড়ছে ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এখন পর্যন্ত ১০০টি দেশে এ অতিসংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় মাথাব্যথার কারণ বিশেষজ্ঞদের। এ ভ্যারিয়েন্টে ধুঁকছে এশিয়ার ইন্দোনেয়েশিয়া, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কাসহ বাংলাদেশও। এ অঞ্চলে দ্রুত সংক্রমণের অন্যতম কারণ হিসেবে ভ্যাকসিন সংকটকে দায়ী করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও। ডব্লিউএইচওর বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের খবরে জানিয়েছে, ডেল্টাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুত সংক্রমণ ঘটাতে পারে। খবরে বলা হয়েছে, ভারতের সীমান্তবর্তী নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কায় গত মে মাসে সংক্রমণ ওপরের দিকে ছিল। কিন্তু বর্তমানে কমলেও সামনে যে বাড়বে না সে নিশ্চিয়তা নেই। এ তিন দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য খাত নাজুক হওয়ায় বেশ ভুগতে হয়েছে নেপালকে। সম্প্রতি বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড এবং মঙ্গোলিয়ায় ডেল্টার প্রকোপ বাড়ছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে ভারতের। ফলে সংক্রমণের সবচেয়ে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ। এ নিয়ে গত ২৫ মে থেকে ৭ জুন পর্যন্ত চালানো একটি জরিপের ফলাফলে দেখা যায় রাজধানী ঢাকায় আক্রান্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশই ডেল্টায় আক্রান্ত।  সংক্রমণের কারণ হিসেবে দেখা গেছে ভ্যাকসিন জটিলতা। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বেশির ভাগ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাই পায়নি ঢাকা। গত এপ্রিলের পর দেশটি থেকে টিকা আসা স্থগিত রয়েছে। অন্য উৎস থেকে চলছে টিকা আনার প্রক্রিয়া। গত ৩০ জুন পর্যন্ত ৩ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে পেরেছে সরকার। আফগানিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়াজিদ মাজরুহ বলেন, গত জুনে তার দেশে সংক্রমণের হার সর্বোচ্চ ছিল। রাজধানী কাবুলে ৬০ শতাংশ আক্রান্ত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে। এদিকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন চলবে আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত। দেশটিতেও মাত্রা ৫ শতাংশ নাগরিককে টিকা দিতে পেরেছে কর্তৃপক্ষ।

সরকারের লক্ষ্য আগামী আগস্টের মধ্যে আরও মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। সম্প্রতি থাইল্যান্ডে বাড়ছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ। এখানে ভ্যাকসিনের সংকট ব্যাপক। তবে মঙ্গোলিয়া টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। দেশটির ৫০ শতাংশ মানুষকে করোনার টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে সরকার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের লাগাম টানতে হলে জনগোষ্ঠীকে দ্রুত ভ্যাকসিনের আওতায় আনা ছাড়া বিকল্প নেই।