রবিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
রাশিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া হুঁশিয়ারি

ইউক্রেনে হামলা চালালে পরিণাম হবে ভয়াবহ

ইউক্রেনে হামলা চালালে পরিণাম হবে ভয়াবহ

জেনারেল মার্ক মিলি

ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমাগত বাড়ছে। দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। এবার ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রাশিয়া যে বাহিনীগুলো জড়ো করেছে, প্রতিবেশী দেশটিতে আগ্রাসন চালাতে তাদের ছেড়ে দেওয়া হলে পরিণাম ‘ভয়াবহ’ ও হতাহতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা। শুক্রবার পেন্টাগনে এক সংবাদ সম্মেলনে চলমান মুহূর্তগুলোকে স্নায়ুযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ সেনাবাহিনীর জেনারেল মার্ক মিলি। ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে উত্তেজনা চলছে। পূর্ব ইউরোপ থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর প্রতি দাবি জানিয়েছে মস্কো আর এই সামরিক জোটে ইউক্রেন যেন কখনো যোগ দিতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বলেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও এর ন্যাটো মিত্ররা রাশিয়ার এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করলেও বলেছে, বিশ্বাস তৈরি করার মতো পদক্ষেপ ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত আছে তারা। ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া যে বাহিনীগুলো মোতায়েন করেছে সেগুলোর ধরনের দিকে ইঙ্গিত করে মিলি বলেন, ‘তাদের সব ধরনের প্যাকেজ একত্র করা হয়েছে, এদের যদি ইউক্রেনের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয় তাহলে তা উল্লেখযোগ্য, খুবই উল্লেখযোগ্য হবে এবং এর ফলাফলে হতাহতের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হবে।’ তিনি যোগ করেন, ‘রাস্তা বরাবর ঘনবসতিপূর্ণ নগর এলাকাগুলোর পরিস্থিতি কী দাঁড়াতে পারে আপনারা তা অনুমান করতে পারেন। এটি ভয়ংকর, ভয়াবহ হবে।’

মিলির পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, ‘রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগ্রাসন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বিশ্বাস করে না যুক্তরাষ্ট্র, তবে এটি করার মতো সামরিক সক্ষমতা এখন তার আছে। শহর ও উল্লেখযোগ্য অঞ্চল দখল করা ছাড়াও বিচ্ছিন্ন অঞ্চলকে স্বীকৃতি দেওয়া মতো জবরদস্তি ও উসকানি মূলক রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো অনেক বিকল্পই তার হাতে আছে।’ যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ছড়ানো গুজব মোকাবিলায় মনোনিবেশ করেছে বলে জানান তিনি। এসব গুজবের যে কোনোটিকে ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অস্টিন। ইউক্রেনের আত্মরক্ষায় সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

উত্তেজনার মধ্যেই ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী : উত্তেজনার মধ্যেই আগামী সপ্তাহে ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ইউক্রেন সংকট নিয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই তিনি দেশটিতে সফর করবেন। বরিস জনসন ইউক্রেন যাচ্ছেন এমন একসময় যখন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা লকডাউন পার্টির তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ পেতে চলেছে। বরিসের ইউক্রেন সফর নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি লকডাউন পার্টির কেলেঙ্কারি থেকে নজর ঘোরাতেই প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেন যাচ্ছেন? যদিও তাঁর দফতরসূত্র বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে যেন কোনো ধরনের রক্তপাত না হয় সেজন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের জন্যই বরিস জনসন ইউক্রেন যাচ্ছেন। রাশিয়া যেন ইউক্রেনের ওপর আক্রমণ না করে, সেটাই বরিস জনসনের সফরের একমাত্র লক্ষ্য। এ সফরের পরই তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে আলাপ করবেন।

এদিকে ইউক্রেন সংকট নিয়ে সতর্ক করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন রাশিয়া আগামী মাসেই (ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে হামলা চালাবে। যদিও রাশিয়া সরকার বারবার জানিয়ে আসছে তারা কোনো যুদ্ধ চায় না। বিবিসি ও রয়টার্স

সর্বশেষ খবর