সোমবার, ২১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

পারমাণবিক অস্ত্রে হাত দিচ্ছেন পুতিন!

পারমাণবিক অস্ত্রে হাত দিচ্ছেন পুতিন!

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ২৬তম দিনে পা দিল। এর মাঝে পুতিনের নির্দেশে নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ব। বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে এ বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। জানা গেছে, ইতোমধ্যে পুতিন তার কর্মকর্তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ইতোমধ্যেই নিজের কাছের মানুষজনকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। সূত্রের খবর, তাঁর স্ত্রী, পরিবারসহ কাছের আত্মীয়দের সাইবেরিয়ার এক ভূগর্ভস্থ শহরে পাঠিয়ে দিয়েছেন ভøাদিমির পুতিন। আলতাই মাউন্টেনে বিশেষ নিউক্লিয়ার বাঙ্কার তৈরি করেছে রাশিয়া। পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করলেও, ওই স্থান রক্ষা পাবে বলেই জানা গেছে। সে কারণেই সেখানে গা ঢাকা দেওয়ার কথা ভেবেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এক রুশ কর্মকর্তার দাবি, রুশ প্রেসিডেন্ট একটি ভূগর্ভস্থ শহর বানিয়ে ফেলেছেন। ডুমসডের দিন তিনি সেখানেই নিরাপদে থাকার পরিকল্পনা করেছেন বলে খবর।

এর আগে বিশ্বকে সতর্ক করেছিলেন পুতিন। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো দেশগুলোকে তিনি বলেছিলেন, ‘ইতিহাসে যা কখনো আগে ঘটেনি, তা এবার ঘটবে।’

যদিও তুমুল চেষ্টা চালিয়েও ইউক্রেনকে এখনো কিছুতেই বাগে আনতে পারছে না পুতিনের সেনা। ফলে দিন যত যাচ্ছে ততই ভয়ংকর থেকে ভয়ংকর অস্ত্র বের করছে রাশিয়া। এবং তা দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে হাসপাতাল, থিয়েটার, স্কুল-কলেজ, কারখানা।

মারিওপোল শহরের অবস্থা সব থেকে খারাপ। বাকি দেশ থেকে ওই শহরের যোগাযোগ সম্পূর্ণ ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। এবার ওই মারিওপোলেই এক স্কুলে গতকাল বোমা হামলা চালায় রুশ বাহিনী। যেখানে ঠাঁই নিয়েছিলেন অন্তত ৪০০ জন। এদিকে ওই শহরেই অবস্থিত ইউরোপের অন্যতম বড় ইস্পাত কারখানা আজভস্টাল। রাশিয়ান গোলার আঘাতে তাও অনেকখানি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। ইউক্রেনের সাংসদ লেসিয়া ভ্যাসিলেঙ্কো টুইটারে একটি ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘ইউরোপের অন্যতম বড় ইস্পাত কারখানা ধ্বংস হয়ে গেল। ইউক্রেনের অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রচুর। পরিবেশও বিপর্যস্ত।’ জানা গেছে, রবিবার ইউক্রেনের দিকে আরও একটি হাইপারসনিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। যার নাম সিজলার। মিসাইলটি ভয়ংকর গতিসম্পন্ন ও শক্তিশালী হওয়ায় ওই নামকরণ করেছিল ন্যাটো।

ভয়ংকর শক্তিশালী এ হাইপারসনিক মিসাইলটি ইউক্রেনের একাধিক অঞ্চল ধ্বংস করে রাখার ক্ষমতা রাখে বলে খবর। কৃষ্ণসাগর থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছে এ মিসাইলটি। দাবি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র ইগোর কোনাশেনকভ বলেন, ‘হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল কৃষ্ণসাগরে যুদ্ধজাহাজ থেকে ইউক্রেনের নিজহান প্যান্ট লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে।’

তবে ইউক্রেনকে ভাঙতে পুতিন কোন সব অস্ত্র ব্যবহার করছেন? দেখে নেওয়া যাক একনজরে :

কিনঝল হাইপারসনিক মিসাইল : শনিবার রাশিয়া প্রথমবারের মতো কিনঝল সিস্টেম থেকে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পশ্চিম ইউক্রেনের একটি ভূগর্ভস্থ অস্ত্র ভা ার ধ্বংস করতে ব্যবহার করা হয়েছিল।

কালিব্র ক্রুজ মিসাইল : রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনজুড়ে সাধারণ নাগরিকের বসবাসের এলাকায় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে কালিব্র ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। ২০১৫ সালে সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে মস্কো এ নির্ভুল অস্ত্রটি ব্যবহার করেছিল এর আগে।

ইস্কান্দার মিসাইল : রাশিয়ানরা ইউক্রেন যুদ্ধে ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এর রেঞ্জ ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বড় বড় বাড়ি এবং সুরক্ষিত সামরিক স্থাপনা ধ্বংস করতে সক্ষম ওয়ারহেড বহন করতে পারে এ মিসাইল। বেলারুশ থেকে ইউক্রেনের ওপর প্রাথমিক হামলা চালানোর সময় ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।

স্মারখ রকেট : যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই কিয়েভ, খারকিভ, ওডেসা, চেরনিহিভ, ইরপিনসহ কয়েকটি ইউক্রেনীয় শহর রাশিয়ার রকেট হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে। হামলায় রুশ সেনা স্মারখ রকেট সিস্টেম ব্যবহার করেছে।

সর্বশেষ খবর