বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

রুশ বিমানবাহিনীর সঙ্গে যেভাবে পাল্লা

রুশ বিমানবাহিনীর সঙ্গে যেভাবে পাল্লা

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের এক মাস হতে চলল। তবে শুরুতে ইউক্রেন জয় যতটা সহজ ভাবা হয়েছিল তা হয়নি। তুমুল লড়াই করে যাচ্ছে জেলেনস্কির দেশ। এ অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হুঁশিয়ারি করে বলেছেন, ব্যর্থ হয়ে রুশ বাহিনী এখন ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। বাইডেন আরও মন্তব্য করেন, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে পুতিনের, এবার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারেন।

এই এক মাসে সবচেয়ে অবাক করার মতো ঘটনা হলো ইউক্রেনের বিমানবাহিনীকে এখনো পরাজিত করতে পারেনি রাশিয়া। সামরিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করেছিলেন, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং সামরিক বিমান দ্রুতই অচল করে দেবে রুশ বাহিনী। কিন্তু বাস্তবে এখন পর্যন্ত তা ঘটেনি। এর বদলে গুলি করে পাখি মারার মতো রুশ বিমানকে ভূপাতিত করছে ইউক্রেনের যোদ্ধারা। দেশটির কর্মকর্তারা দাবি করছেন, তাদের সেনাবাহিনী রাশিয়ার ৯৭টি উড়োজাহাজ ধ্বংস করেছে। এই সংখ্যার সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম। কিন্তু নদী, খেত ও বাড়িতে রুশ যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা তারা জানিয়েছে।

ইউক্রেনীয় পাইলটদের সফলতা স্থলে থাকা সেনাদের সুরক্ষিত থাকতে সহযোগিতা করছে। একই সঙ্গে শহরে বড় ধরনের বোমাবর্ষণও ঠেকাচ্ছে। ইউক্রেনের যুদ্ধবিমানের পাইলটরা কয়েকটি রুশ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী চরম গোপনীয়তা বজায় রেখে লড়াই করছে। কখনো পশ্চিম ইউক্রেনের বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করছে যুদ্ধবিমান। যে বিমানবন্দরে রাশিয়া বোমাবর্ষণ করেছে। কিন্তু এখনো টেকঅফ বা অবতরণের জন্য পর্যাপ্ত রানওয়ে রয়ে গেছে। আবার কখনো হাইওয়ে থেকেও উড্ডয়ন করছে ইউক্রেনীয় বিমান। তাদের যুদ্ধবিমানের সংখ্যা রাশিয়ার তুলনায় অনেক কম। ধারণা করা হয়, রাশিয়া যেখানে প্রতিদিন দুই শর মতো যুদ্ধবিমান উড়াচ্ছে সেখানে ইউক্রেনের সংখ্যা হতে পারে মাত্র ১০টি। ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র ইউরি ইহনাত বলেন, আকাশে ইউক্রেন কার্যকর রয়েছে কারণ নিজেদের ভূখে  কাজ করছি। শত্রুদের আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় উড়তে হচ্ছে। এর ফলে শত্রু বিমানকে আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ফাঁদে ফেলা সম্ভব হচ্ছে। 

অর্থাৎ ইউক্রেনের পাইলটদের একটি সুবিধা রয়েছে। দেশের বেশির ভাগ ভূখে  রুশ যুদ্ধবিমানকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত আকাশে উড়তে হচ্ছে। ফলে তারা বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দ্রুত স্থানান্তর করে গুলি করে রুশ বিমান ভূপাতিত করতে পারছে। ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি বারবার পশ্চিমা সরকারগুলোর কাছে ইউক্রেনের বিমানবাহিনীকে শক্তিশালী ও ন্যাটোকে ইউক্রেনকে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এখন পর্যন্ত এই দুই পদক্ষেপ নেননি পশ্চিমা নেতারা। স্লোভাকিয়া ও পোল্যান্ড মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করেছে। এই যুদ্ধবিমানগুলো সহজেই চালাতে পারবে ইউক্রেনীয় পাইলটরা।

 কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো যুদ্ধবিমান পায়নি ইউক্রেন। ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর এই সফলতায় দেশটির স্বেচ্ছাসেবকদেরও ভূমিকা রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকদের একটি নেটওয়ার্ক রুশ যুদ্ধবিমানের গতিবিধিতে নজর রাখে, অবস্থান এবং সম্ভাব্য গতি ও উচ্চতা তারা জানানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। ইউক্রেনের বেসরকারি বিমানের পাইলটরা বেসামরিক বিমানে নেভিগেশন সরঞ্জাম খুলে বিমানবাহিনীকে দিয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমস

সর্বশেষ খবর