রবিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

ইরানে শত্রুরা ব্যর্থ হয়েছে : রাইসি

ইরানে শত্রুরা ব্যর্থ হয়েছে : রাইসি

ইরান বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করেছে। ফলে ‘শত্রুরা’ সহিংসতা উস্কে দিয়ে তেহরানের প্রতি  তাদের মনের ঝাল মেটানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।

রাইসি বলেন, ‘শত্রুরা সাম্প্রতিক নৈরাজ্যের সময় দেশে ঝামেলা তৈরির চেষ্টা করেছিল। কিন্তু অতীতের মতো জনগণ ধৈর্য ও প্রতিরোধের মাধ্যমে তা নস্যাৎ করে দিয়েছে।’ সাম্প্রতিক ‘সহিংসতা ও নৈরাজ্যের সময়’ ধৈর্যধারণ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য জনগণের প্রশংসা করেন তিনি। ইরানের বৈজ্ঞানিক উৎকর্ষ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাণিজ্যিক সহযোগিতার বিস্তার এবং সামগ্রিকভাবে প্রশাসনের প্রতি জনগণের আন্তরিক সহযোগিতার প্রশংসা করেন ইব্রাহিম রাইসি।

এদিকে ইরানের হিজাববিরোধী বিক্ষোভ-আন্দোলন দমনে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ২৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একটি বিশদ বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিক্ষোভ চলাকালে বেআইনি বল প্রয়োগের ফলে ২৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিহত এই শিশুদের নাম প্রকাশের পাশাপাশি কিভাবে কোন পরিস্থিতিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে সেটিও তুলে ধরেছে অ্যামনেস্টি।

অ্যামনেস্টি বলছে নিহত শিশুদের মধ্যে ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সী ২০ জন ছেলে ও তিন জন মেয়ে। এই শিশুদের বেশিরভাগ নিহত হয়েছে তাদের লক্ষ্য করে পুলিশের ছোড়া গুলিতে। এ ছাড়া চার শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিকে বিক্ষোভের নামে ইরানি গার্ড এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সদসদের হত্যা করা হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ এনেছে ইব্রাহিম রাইসির সরকার। ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত পুলিশ, সেনা ও আধা সেনা মিলিয়ে অন্তত ২০ জনকে হত্যা করেছে বিক্ষোভকারীরা। এদের মধ্যে দুজন অফিসারকে শুক্রবার গুলি করে হত্যা করা হয়। আততায়ীরা মোটর সাইকেলে করে এসে ওই দুই অফিসারের মাথা এবং বুকে গুলি করে পালিয়ে যায় বলে দাবি করা হচ্ছে। তেহেরানের দাবি, এসবের নেপথ্যে রয়েছে বিদেশি শত্রুর হাত।

 এই ইস্যুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিশানা করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। যদিও হিজাব আন্দোলনকারীদের একটা বড় অংশই ইরান সরকারের যুক্তি মানতে নারাজ। তাদের দাবি, বিক্ষোভ থামানোর নামে নির্যাতন করার জন্যেই জনগণের রোষের মুখে পড়তে হচ্ছে ইরানি গার্ডকে। এক আন্দোলনকারীর বলেন, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভে শামিল থাকায় এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে ইরানি গার্ডের কমান্ডাররা। এরপরই স্থানীয়রা ৬ গার্ডকে পিটিয়ে মারে। হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি হেফাজত থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাহসা আমিনি। পুলিশি নির্যাতনে আমিনির প্রাণহানি ঘটেছে বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। এই ঘটনার পর ইরানে গত তিন বছরের মধ্যে বৃহত্তম বিক্ষোভ শুরু করেছেন দেশটির তরুণ-তরুণী, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি স্কুলের শিক্ষার্থীরাও। আন্দোলনকারী তরুণ-তরুণীরা হিজাব খুলে প্রায় প্রত্যেক দিনই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মুখোমুখি হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর