বুধবার, ১০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইউক্রেন যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করলেন পুতিন

ইউক্রেন যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করলেন পুতিন

রাশিয়ার বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকাল ক্রেমলিনে বিজয় মঞ্চের দিকে নেতাদের নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন -এএফপি

বিশ্ব আজ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে আবারও ‘সত্যিকারের যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে। মস্কোর রেড স্কয়ারে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

তিনি বলেন, রাশিয়া একটি শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যৎ দেখতে চায়। গোটা দেশই এখন ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’-এর পেছনে রয়েছে উল্লেখ করে পুতিন এতে জয়লাভের অঙ্গীকার করেন এবং বলেন, ইউক্রেনে লড়াই করা সেনাদের ওপরই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। ভাষণে প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের লড়াইয়ের সমতুল্য বলেও উল্লেখ করেছেন।

তিনি মন্তব্য করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত যেমন নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল, এখন সেভাবেই রাশিয়া তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় লড়াই চালাচ্ছে। পুতিন তাঁর ভাষণে বলেন, রাশিয়া একটা ‘শান্তিপূর্ণ’ ভবিষ্যৎ চায় এবং ‘ঘৃণা ও রাশিয়াভীতি’র বীজ বপনের জন্য তিনি পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব এমনকি পারিবারিক মূল্যবোধও ধ্বংস করে দিচ্ছে।

মস্কোয় বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ এ বছর আগের তুলনায় কিছুটা ম্লান হলেও বেলারুস এবং মধ্য এশিয়ার কিছু দেশসহ সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর কিছু নেতা তাতে যোগ দেন। বিবিসির রাশিয়া বিষয়ক সম্পাদক জানান, এবারের কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া সৈন্যের সংখ্যা ছিল কম। গত বছর কুচকাওয়াজে অংশ নেয় ১১ হাজার সৈন্য, এবার সেই সংখ্যা ছিল ৮ হাজার। ট্যাংকসহ আধুনিক সামরিক সরঞ্জামাদিও প্রদর্শিত হয়েছে তুলনামূলকভাবে কম এবং ফ্লাই-পাস্ট বা বিমান বাহিনীর প্রদর্শনও ছিল অনুপস্থিত। রাশিয়া প্রতিবছর ৯ মে বিজয় দিবস পালন করে থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির নাৎসিদের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন এই দিন বিজয় অর্জন করে। পুতিন ইউক্রেনের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে নাৎসিদের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘পশ্চিম ভুলে গেছে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে নাৎসিদের কারা পরাজিত করেছিল।’ তিনি আরও বলেন, পূর্ব ইউক্রেনের জনগণকে রক্ষা করা এবং ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাশিয়া নিয়েছে। রুশ জনগণের উদ্দেশে পুতিন বলেন, ‘আমাদের মাতৃভূমির ভাগ্য নির্ধারণ করে যে যুদ্ধ, তা সবসময়েই একটা জাতীয় লড়াই এবং সবসময়েই তা পবিত্র।’ সেই লড়াইয়ের চেয়ে ‘বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু হতে পারে না’- সম্মুখ রণাঙ্গনে যারা লড়ছে তাদের ওপরই নির্ভর করছে রাশিয়ার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা। ‘সবাই আপনাদের জন্য প্রার্থনা করছেন,’ রেড স্কোয়ারের কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া সৈন্যদের উদ্দেশে তিনি মন্তব্য করেন। এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে গতকালও রাশিয়া ইউক্রেনের রাজধানীর ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ভোরে শুধু রাজধানী কিয়েভের ওপর প্রায় ১৫টি ক্রুজ মিসাইল নিক্ষেপ করে। তবে ইউক্রেনের সূত্র অনুযায়ী প্রত্যেকটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর