বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

৬৫ গুণ দ্রুত গলছে হিমালয়ের বরফ

বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা

৬৫ গুণ দ্রুত গলছে হিমালয়ের বরফ

বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে চিন্তার ভাঁজ গবেষকদের অনেক দিন ধরেই। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, সমুদ্রের পানিস্তর বৃদ্ধি পাওয়া থেকে শুরু করে অসময়ে বৃষ্টিপাত- এ বিষয়গুলো অশনি সংকেত বলেই মনে করছেন গবেষকদের একাংশ। তবে এবার কাঠমান্ডুতে প্রকাশিত গবেষকদের রিপোর্টে ভয় ঢুকেছে সবার মনে।

মাউন্ট এভারেস্ট এবং কে২-তে প্রায় ২০০০ বছরে যতটা বরফ জমেছিল, তা গলতে সময় লেগেছে মাত্র ৩০-৩২ বছর। গবেষকদের অনুমান, কে২ আর এভারেস্টের বরফের চাদর প্রতি বছর প্রায় দুই মিটার করে পাতলা হচ্ছে। মাউন্ট এভারেস্টে বরফ গলে যাওয়ার হার স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৮০ গুণ বেশি যা বেশ উদ্বেগজনক! সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেইন ডেভেলপমেন্টের (আইসিইএমওডি) একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, এ তথ্য জানানো হয়েছে। কে২ বা কেটু এভারেস্ট পর্বতের পর বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। হিমালয় পর্বতমালার কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির অন্তর্গত এ পর্বতশৃঙ্গটি আজাদ কাশ্মীরের গিলগিত-বালতিস্তান ও চীনের জিংজিয়ানের তাক্সকোরগান সীমান্তে অবস্থিত।

হিমালয়ের হিন্দুকুশ অঞ্চল থেকে প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ পানি পায়। এ ছাড়া হিমালয়ের নিচে অবস্থিত উপত্যকাতে বিভিন্ন নদী মারফত প্রায় ১৬৫ কোটি মানুষ পানি পেয়ে থাকেন। এ গবেষণার প্রধান গবেষক ফিলিপ্পাস ওয়েস্টার একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘পরিবেশ তপ্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় বরফ গলবে তা সহজেই অনুমান করা যায়। কিন্তু অত্যন্ত দ্রুত বরফ গলছে। আর এ বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, এ শতকের শেষে হিমালয়ের ৮০ শতাংশ হিমবাহ গলে যেতে পারে। তার মন্তব্য, ‘আমরা যেমনটা ভেবেছিলাম, তার চেয়ে বেশি গতিতে গলছে।’ গঙ্গা, সিন্ধু, মেকং, হোয়াংহো (ইয়েলো), ইরাবতিসহ বিশ্বের বড় বড় ও গুরুত্বপূর্ণ ১০টি নদীর পানির উৎস হিমালয়ের হিমবাহগুলো এবং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোটি কোটি মানুষের খাদ্য, জ্বালানি ও দূষণমুক্ত বায়ুর জোগান দেয়। একই সঙ্গে বিপুলসংখ্যক এ মানুষের আয় অনেকটাই এর ওপর নির্ভরশীল। এর আগে এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি মেনে যদি বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বাড়ে, তাহলে হিমবাহের অর্ধেক ২১০০ সালের মধ্যে গলে নিঃশেষ হবে।

সর্বশেষ খবর