মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

পরমাণু বোমা হামলার দিকে যাচ্ছে যুদ্ধ

পরমাণু বোমা হামলার দিকে যাচ্ছে যুদ্ধ

সম্প্রতি রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছে ইউক্রেন। রাশিয়া এখনো পর্যন্ত ইউক্রেনের যেসব অংশ দখল করেছে, সেই অংশগুলো পুনরুদ্ধার করতেই এই আক্রমণ বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। এদিকে এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতেই রাশিয়া ফের একবার পরমাণু-হামলার কথা জানিয়েছে। যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মণ্ডলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।

রবিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বলেন, পাল্টা সামরিক অভিযান চালিয়ে ইউক্রেন যদি রাশিয়াকে খণ্ড বিখণ্ড করতে সফল হতো তাহলে মস্কো কিয়েভের বিরুদ্ধে পরমাণু বোমা ব্যবহার করত। রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান বলেন, কল্পনা করুন ইউক্রেন যদি রাশিয়ার কোনো অংশ বিচ্ছিন্ন করত তাহলে মস্কোর সামনে পরমাণু বোমা ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো পথ থাকত না।

রাশিয়ার পরমাণু ডকট্রিনে বলা হয়েছে, দেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে সামরিক বাহিনী পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন ও ব্যবহার করতে পারবে। মেদভেদেভ আরও বলেন, ন্যাটোর সমর্থনে ইউক্রেন যে আক্রমণ চালাচ্ছে, তা যদি সফল হয় এবং তারা আমাদের ল্যান্ড দখল করে, তাহলে রুশ প্রেসিডেন্টের ডিক্রি অনুসারে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে বাধ্য হবে। মেদভেদেভ এর আগেও একাধিকবার এ ধরনের বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে। বলেছিলেন, চলতি যুদ্ধে রাশিয়া হেরে গেলে পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু করবে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। এখন তার হুমকিকে নিছক হুমকির পর্যায়েই ভাবা হবে, নাকি তার সারবত্তা খোঁজা হবে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল। প্রসঙ্গত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এক ডিক্রি জারি করেছিলেন। সেই ডিক্রি অনুযায়ী, (যুদ্ধে) রাশিয়ার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে সেই আগ্রাসনের জবাবে তারা গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে। এখানে পুতিনের সেই ডিক্রির কথাই উল্লেখ করেছেন মেদভেদেভ।

যুদ্ধ এবার রাশিয়ার দিকে যাচ্ছে-জেলেনস্কি : মস্কোতে এক ড্রোন হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যুদ্ধ এখন তাদের দিকে ফেরত যাচ্ছে। দুই দেশের চলমান এই যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়ার সীমানার ভিতরে আক্রমণ হওয়াকে ‘স্বাভাবিক, অবশ্যম্ভাবী ও সম্পূর্ণ ন্যায্য’ বলে আখ্যা দিয়েছেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে রবিবার তিনটি ইউক্রেনিয়ান ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি ড্রোন অফিস ভবনের ভিতরে পড়েছে। এ ঘটনার জের ধরে শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত ভ্নুকভো বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ড্রোন হামলার পর রবিবার পশ্চিম ইউক্রেনের ইভানো-ফ্রাংকিভস্ক শহর থেকে এক বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন শক্তিশালী হচ্ছে।’ তথাকথিত ‘বিশেষ সেনা অভিযানের আজ ৫২২তম দিন। রুশ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা ভেবেছিল যে এই অভিযান সপ্তাহ দুয়েকের বেশি চলবে না।’ ‘ধীরে ধীরে যুদ্ধ রাশিয়ার মাটিতে ফিরে যাচ্ছে। আর এটিই স্বাভাবিক, অবশ্যম্ভাবী এবং সম্পূর্ণ ন্যায্য’, বলেন জেলেনস্কি। এর আগে রাশিয়ায় হামলা হলে কিয়েভকে সেগুলোর দায় নিতে দেখা যায়নি। এবার অনেকটা স্বভাববিরুদ্ধভাবেই এই হামলার কৃতিত্ব নিতে দেখা যাচ্ছে ইউক্রেনকে।

সর্বশেষ খবর