শিরোনাম
রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে না থেকেও আলোচনায় শি-পুতিন

জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে না থেকেও আলোচনায় শি-পুতিন

ভারতে ১৮তম জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং। জোটের প্রভাবশালী দুটি দেশের শীর্ষ নেতাদের অনুপস্থিতি সম্মেলনকে অনেকটা তাৎপর্যহীন করে দিয়েছে। গতকাল দিল্লিতে শুরু হওয়া দুই দিনের জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রতিনিধিত্ব করছেন প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং। রাশিয়ার পক্ষে থাকছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। দুটি দেশই এ মুহূর্তে জি২০ শীর্ষ জোটকে পাত্তা দিচ্ছে না তা অনেকটা স্পষ্ট। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে অনুপস্থিত থেকে শি হয়তো চীন-ভারত সীমান্তে চলমান উত্তেজনা নিয়ে এবং বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে দিল্লিকে ব্যবহারে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতার জবাব হিসেবে মোদিকে কড়া বার্তা দিতে চান। আবার চীনের অর্থনৈতিক সংকট এবং অভ্যন্তরীণ অসন্তোষের কারণে তিনি ঘর ছাড়ার ঝুঁকি নিচ্ছেন না- এমনটাও হতে পারে।

চীন যদি অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে তা সারা বিশ্বকে প্রভাবিত করবে। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই অর্থনৈতিক জোটের নেতাদের আলোচনা করার যে সুযোগ ছিল, শি জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে না থাকায় তা হাতছাড়া হলো। এমন পরিস্থিতি বিশ্বের অর্থনৈতিক সংকট ত্বরান্বিত করতে পারে। এ বিষয়ে ওয়াশিংটনভিত্তিক থিংক ট্যাংক ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের বিশ্লেষক ড. ব্রুস জোনস বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বা বিশ্বব্যাংকের বিপরীতে জি২০ এর মতো একটি গোষ্ঠীর মূল সক্ষমতা সত্যিকার অর্থে সদস্য দেশগুলোর প্রধানদের ওপর নির্ভরশীল। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের মতো বহুপক্ষীয় আয়োজনের মূল কাজ হয় মূলত দ্বিপক্ষীয় ও ব্যক্তিগত বৈঠকগুলোতে। তাই কোনো নেতা এখানে উপস্থিত না থাকলে বিষয়গুলোর কোনোটিই অর্জন করতে পারবেন না।’ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট সাধারণত জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত থাকেন। এবার তিনি উপস্থিত না থাকায় ইউক্রেন সংকটে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সংকট ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সবচেয়ে জরুরি আলোচনার সুযোগ বন্ধ হলো। তবে পুতিন কেন ভারতের জি২০ শীর্ষ সম্মেলন নেই সেটাই বড় প্রশ্ন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দহরম-মহরম বেশি হলেও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক মোটেই খারাপ নয়। তাছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানার কারণে তার বিদেশে না যাওয়ার বিষয়টিও এখানে প্রযোজ্য নয়। কারণ ভারত এ আদালতের সদস্য না হওয়ায় পরোয়ানা বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক নয়। জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত না থাকলেও রবিবার ভ্লাদিভস্টকে অনুষ্ঠেয় ইস্টার্ন ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেবেন পুতিন। সেখানে তিনি উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এবারে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে বিশেষ কিছু চায় না পুতিন। বিশ্লেষকদের মতে, এই সম্মেলনে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের নিন্দা প্রস্তাব যাতে পাস না হয়, সেটা নিশ্চিত করার চেষ্টা থাকবে। আর মার্কিনিদের বিশ্বাস- ঝানু কূটনীতিবিদ হিসেবে ল্যাভরভ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পুতিনের স্বার্থ হাসিলের অন্যতম হাতিয়ারে পরিণত হয়েছেন। সেটা তিনি এবারও করবেন।

শি-পুতিনের অনুপস্থিতি নিয়ে আয়োজক ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছেন, তাতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন থেমে থাকবে না এবং বিষয়টি অস্বাভাবিকও নয়। তবে সম্মেলন যে নিষ্প্রভ হবে সে বিষয়ে দ্বিমত করার সুযোগ কম। এএফপি।

সর্বশেষ খবর