শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিকিমে বিপর্যয়, পানির তোড়ে ভেসে আসছে লাশ

সিকিমে বিপর্যয়, পানির তোড়ে ভেসে আসছে লাশ

ভারতের সিকিম রাজ্য তিস্তার পানির তোড়ে বিপর্যস্ত  হয়ে পড়েছে। প্রচ- পাহাড়ি ঢলে একই অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়ও। পানিতে ভেসে গেছে ঘরবাড়ি। আতঙ্কে দিন কাটছে মানুষের। এর মধ্যেই জলপাইগুড়িতে পানির স্রোতের সঙ্গে একাধিক লাশ ভেসে আসতে দেখা গেছে। সিকিমের আকস্মিক বন্যায় অন্তত ১৪ জন বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। এর মধ্যে ২২ সেনাসদস্যসহ নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ১০২ ব্যক্তি। এ বিপর্যয়কে একটি দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে সিকিম সরকার। বুধবার ভোর থেকেই টানা বৃষ্টিতে সিকিমের লোনাক হ্রদের বাঁধ ফেটে যায়। পাশাপাশি অতিবৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানির স্তর বেড়ে যায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তিস্তার পানির স্রোতে ভেসে আসছে লাশ, জামাকাপড়, বাসনপত্র, গবাদি পশু, রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। এসব দেখে সাধারণ মানুষ আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।

জলপাইগুড়ির তিস্তা রেল সেতুর কাছেও পানি বেড়ে গেছে। সমতলে তিস্তার দুই পার থেকে অন্তত ৫ হাজার বাসিন্দাকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন। জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার মিলিয়ে খোলা হয়েছে ২৮টি ত্রাণশিবির।

কলকাতার আলিপুর আবহাওয়া অফিস গতকাল জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় আজও মাত্রাতিরিক্ত ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। উত্তরের এই তিন জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলায়ও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে সিকিমে আটকে পড়েছেন প্রায় ৩ হাজার পর্যটক। লোহা ও কংক্রিটের সেতু ভেঙেছে ১৪টি। তিস্তায় তলিয়ে গেছে ২৫টি বাড়ি। ইতোমধ্যে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে ৩০টি। সিকিমে তলিয়ে গেছে জলকাদায় সেনার ৪১টি গাড়ি। ডেকুচু ও চুথাং-এর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ ভেঙেছে। জলপাইগুড়ির গজলডোবা এলাকায় এক নারীসহ তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সিকিম বা রাজ্যের পাহাড়ি এলাকা থেকে ভেসে এসেছে এসব লাশ। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর চারটি দল শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি জেলায় উদ্ধারকাজের জন্য এসেছে। রয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলার আরও সাতটি দল।

বন্যায় বিধ্বস্ত হয়েছে দার্জিলিং জেলার কালিম্পং। এখানকার সড়কের ১৫টি জায়গায় ধস নেমেছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাড়ছে দার্জিলিংয়ের নদীর পানি। চলছে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে। বিপজ্জনক এলাকা থেকে সরানো হয়েছে প্রায় ২ হাজার মানুষকে। দার্জিলিংয়ের একটি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে দুই শতাধিক মানুষকে।

পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ২ হাজার পর্যটক সিকিমে আটকা পড়েছেন বলে জানা গেছে। জাতীয় সড়কে যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে। ফলে আপাতত ফেরার পথও বন্ধ। রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিকিম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর