রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

গাজায় কোনো জায়গা আর নিরাপদ নেই

জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি

গাজায় কোনো জায়গা আর নিরাপদ নেই

গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলা চলছেই। রেহাই পাচ্ছে না ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, এমনকি অ্যাম্বুলেন্সও। গতকাল গাজা সিটিতে হামলায় আহত এক শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন তার স্বজনরা -এএফপি

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় সেখানে আর কোনো জায়গাই নিরাপদ নেই বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা। এক বিবৃতিতে সংস্থাটির পরিচালক টমাস হোয়াইট জানিয়েছে, সেখানকার বাসিন্দাদের বাঁচাতে জাতিসংঘের কোনো কিছুই করার নেই।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এরই মধ্যে ৯ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে জানিয়েছে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাদের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। সর্বশেষ ইসরায়েলি বিমান হামলার শিকার হয়েছে মধ্য গাজার আল শিফা হাসপাতাল থেকে রাফাহ ক্রসিংয়ে যেতে থাকা একটি অ্যাম্বুলেন্সের বহর। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই হামলায় অন্তত ১৩ জন মারা গেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতাল থেকে আহতদের নিয়ে রাফাহ সীমান্ত পার করছিল অ্যাম্বুলেন্সের বহরটি। হামাস দাবি করেছে, ইসরায়েলি বাহিনী ওই হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীও নিশ্চিত করেছে, তারা একটি অ্যাম্বুলেন্সে হামলা চালিয়েছে। তবে তারা বলছে, ওই অ্যাম্বুলেন্সে হামাসের সদস্যরা ছিল। একটি ভিডিওতে দেখা যায় হাসপাতালের বাইরে রাস্তায় রক্তের মধ্যে কয়েকজন মানুষ পড়ে আছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিথর হয়ে পড়ে আছে আবার কেউ আহত হয়ে ছটফট করছেন। কয়েকটি ভিডিও যাচাই করে দেখা গেছে, ওই ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত বা নিহত হয়েছেন।

এদিকে গাজার প্রতিটি মানুষ গড়ে প্রতিদিন দুটি রুটি খেয়ে টিকে আছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা। ইসরায়েলের হামলার মুখে অবরুদ্ধ অঞ্চলটির পানি ও খাদ্য পরিস্থিতির মূল্যায়নে তিনি এ মন্তব্য করেন। কূটনীতিকদের সঙ্গে এক ভিডিও ব্রিফিংয়ে থমাস হোয়াইট বলেন, গাজার গড় বাসিন্দারা দিনে দুই টুকরো আরবি রুটির ওপর জীবন ধারণ করছেন। পানির সমস্যা এখানে ক্রমে প্রকট হয়ে উঠছে। সাহায্য প্রসঙ্গে একটি এলাকার চিত্র তুলে ধরেন থমাস হোয়াইট। যেখানে ফিলিস্তিন শরণার্থীদের জন্য ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস প্রায় ৮৯টি রুটির কারখানাকে সাহায্য করছে। কিন্তু এখন মানুষ হন্যে হয়ে পানি খুঁজছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় গাজাজুড়ে ভ্রমণ করেছেন তিনি। বলেন, ছিটমহলটি ‘মৃত্যু ও ধ্বংসের’ সমর্থক হয়ে উঠেছে। ২১ অক্টোবর গাজায় সীমিত সাহায্যের অনুমতি দেয় ইসরায়েল। এর আগে দুই সপ্তাহে খাদ্য, পানি ও জ্বালানির অভাবে মানবেতর পরিস্থিতি তৈরি হয়। কিন্তু পরিদর্শনে দীর্ঘ সময় লাগায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশে বিলম্ব হয়। কয়েক দিন আগে মধ্য গাজার একটি গুদামে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। যেখানে মজুদ ছিল জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সহায়তা। ডব্লিউএফপি প্রতিনিধি ও ফিলিস্তিনের কান্ট্রি ডিরেক্টর সামের আবদেলজাবের বলেন, ঘটনাটি দেখায় মানুষ ‘আশা হারাচ্ছে ও প্রতি মুহূর্তে আরও মরিয়া হয়ে উঠছে’। বিবিসি

সর্বশেষ খবর