মধ্যপ্রাচ্যে বলা চলে আজই শেষ হচ্ছে রমজান মাস। ফলে কালই আনন্দের ঈদ। সারা মুসলিম জাহান যখন খুশির পবিত্র ঈদের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন গাজাবাসী অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে। তাদের চারপাশে শুধু ধ্বংসস্তূপ। অবশ্য এর মধ্যে একটু ইতিবাচক সংবাদ হচ্ছে দক্ষিণের খান ইউনিস থেকে ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর গাজাবাসী তাদের বিধ্বস্ত বাড়িঘরে ফেরা শুরু করেছেন। তবে তাদের এই বাড়ি ফেরায় আনন্দ থাকলেও চোখে মুখে সব হারানোর বেদনা ফুটে উঠেছে। তারা ফিরছেন পুরো অনিশ্চয়তা নিয়ে। বসবাসের উপযোগী কোনো স্থাপনা চোখে পড়ে না। পেটে খাবার নেই তাদের। অসুখে নেই ওষুধ। আছে বোমাতঙ্ক। চোখেমুখে হতাশা। মিসরের রাজধানী কায়রোতে যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার কথা শোনা যাচ্ছে তা নিয়ে পরস্পরবিরোধী রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। মিসরীয় মিডিয়া থেকে বলা হচ্ছে আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু হামাস কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের দাবি অব্যাহতভাবে প্রত্যাখ্যান করছে ইসরায়েল।
দক্ষিণ গাজা থেকে সেনা কমিয়েছে ইসরায়েল : দক্ষিণ গাজায় মাত্র একটি ব্রিগেড রেখে বাকি সৈন্যদের সরিয়ে নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। দেশটির সামরিক বাহিনী রবিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। অবশ্য গাজায় উল্লেখযোগ্য সামরিক উপস্থিতি থাকবে বলে জোর দিয়ে জানিয়েছে তারা। ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল পিটার লার্নার বিবিসিকে বলেছেন, এটি যুদ্ধের তৎপরতার আরেকটি পর্যায়। সৈন্য ফিরিয়ে নেওয়াকে যুদ্ধ শেষের ইঙ্গিত মনে করার কারণ নেই। বরং এটিকে কৌশলগত দিক হিসেবেই দেখা হচ্ছে। বিবিসি জানায়, রবিবার থেকেই খান ইউনিস থেকে সেনা সরাতে শুরু করে ইসরায়েল। খবর পেয়ে সে দিনই নগরীর নিজ বসতভিটায় ফিরতে শুরু করেন ফিলিস্তিনিরা। কিন্তু অনেকেই বলেছেন, তারা বাড়িঘর কিছু খুঁজে পাননি। গাজার যুদ্ধ শুরুর ছয় মাস পর দক্ষিণাঞ্চল থেকে একটি ব্রিগেড বাদে সব স্থল সেনা প্রত্যাহার করেছে ইসরায়েল। ৭ অক্টোবর হামাসের রকেট হামলার পর ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করে। এ পর্যন্ত এই যুদ্ধে তারা কমপক্ষে ৩৩ হাজার ১৭৫ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৫ হাজার ৮৮৬ জনকে। এদিকে দক্ষিণ থেকে সেনা প্রত্যাহারের ফলে গাজার রাফাহ নগরীতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বিলম্বিত হবে কি না তা স্পষ্ট জানা যায়নি। রাফায় অভিযান চালানোর বিষয়ে ইসরায়েল এখনো বদ্ধপরিকর। তবে কবে নাগাদ এ অভিযান পরিচালনা করা হবে সে বিষয়ে কিছু জানাননি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে রাফাহ নগরীতে আশ্রয় নিয়ে আছে বহু ফিলিস্তিনি। দক্ষিণের খান ইউনিস থেকে ইসরায়েলি সেনা চলে যাওয়ার কথা শুনে রাফায় বাস করা এক ফিলিস্তিনি বিবিসিকে বলেন, খান ইউনিসের আশ্রয় শিবিরে থাকা তার এক প্রতিবেশীর বাড়ি ফেরার খবর পেয়ে তিনি আশান্বিত।