বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩ ০০:০০ টা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল

'মুজাহিদ ফরিদপুরে শান্তি কমিটি গঠন করেন'

'মুজাহিদ ফরিদপুরে শান্তি কমিটি গঠন করেন'
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়েছেন প্রসিকিউশনের ১২তম সাক্ষী ফরিদপুরের চিত্তরঞ্জন সাহা। গতকাল বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী মুন্সি আহসান কবির সাক্ষীকে জেরা করেন। আগামী ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি করা হয়েছে। জবানবন্দিতে চিত্তরঞ্জন সাহা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ফরিদপুরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আসার পর মুজাহিদ ওই অঞ্চলে শান্তি কমিটি গঠন করেন। কয়েকদিন পর রাজাকার ও বিহারিরা গ্রামের বাড়ি-ঘর পুড়ে দেয়। আমি গ্রাম ছেড়ে লক্ষ্মীপুর গ্রামের দেবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে থাকি। এখানে আমি খালিশপুর বাজারে পাট ও ভুসির ব্যবসা করতাম। ১৯৭১ সালের ১৩ মে সকালে দোকান বন্ধ করে লক্ষ্মীপুরে যাওয়ার সময় দেখলাম খোলা জিপে করে কিছু লোক বোর্ড অফিসের দিকে যাচ্ছিল। তারা জানায়, আজ মাছচড় ইউনিয়নে শান্তি কমিটি গঠিত হবে। এ জন্য ফরিদপুর থেকে শান্তি কমিটির মুজাহিদ, আফজাল উকিল, আলাউদ্দিন খাঁ কালু বিহারিসহ আরও কিছু লোক বোর্ড অফিসে যাচ্ছে। আমি ওই স্থান থেকে চলে যাই। বিকালে ফরিদপুর বাজারে এসে জানতে পারি তারা মিটিং শেষ করে বিহারি ও আলবদরের লোকেরা বাকচরের হিন্দু পল্লীতে যায়। পরে খবর পাই, বাকচরের বহুলোককে তারা মেরে ফেলেছে। 'আলীম শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের নেতা ছিলেন' : মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের নবম সাক্ষী জাহেদুল ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-২ এ জবানবন্দিতে তিনি বলেন, শান্তি কমিটি ও রাজাকারদের নেতা হিসেবে আবদুল আলীম মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যায় প্ররোচনা দিতেন। জবানবন্দি শেষে সাক্ষীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসানুল হক। মামলার কার্যক্রম আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। গোলাম আযম, নিজামী ও সাঈদীর আবেদনের শুনানি : জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম, আমির মতিউর রহমান নিজামী ও নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর খারিজ হওয়া পুনর্বিচারের তিন আবেদনের ওপর রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-১ এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক শুনানি করেন। শুনানিতে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, স্কাইপ কথোপকথন হ্যাকড করা বা অবৈধ উপায়ে সংগৃহীত কোনো ডকুমেন্ট নয়। বরং এটি সর্বজন স্বীকৃত প্রতিষ্ঠিত ও সত্য ডকুমেন্ট। এটি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। আজ পর্যন্ত বিচারপতি নিজামুল হক, আহমেদ জিয়াউদ্দিন-কেউ এটি অস্বীকার করেননি। প্রসিকিউশনের পক্ষে মীর ইকবাল বলেন, আবেদন খারিজ করে দেওয়া ট্রাইব্যুনালের আদেশ যথাযথ হয়েছে। স্কাইপ হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিচারকের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আসামিপক্ষের তিন আইনজীবীকে ক্ষমা : অবমাননার দায় থেকে ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের আইনজীবী তাজুল ইসলাম ও মিজানুল ইসলামসহ তিন আইনজীবীকে ক্ষমা করা হয়েছে। অভিযুক্তরা নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলে ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন। এদিকে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমের অপসারণ চেয়ে করা দুটি আবেদনের ওপরে আগামী ২০ জানুয়ারি আদেশ দেবেন ট্রাইব্যুনাল। কাদের মোল্লার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন : মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার পক্ষে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন অব্যাহত রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-২ এ আইনজীবী আবদুস সোবহান যুক্তি উপস্থাপন করেন। এ মামলার কার্যক্রম আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর