বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩ ০০:০০ টা
বাংলা একাডেমীর নির্দেশনা

একুশে গ্রন্থমেলায় নিষিদ্ধ রবীন্দ্রনাথ সুনীল সমরেশের বই

একুশে গ্রন্থমেলায় নিষিদ্ধ রবীন্দ্রনাথ সুনীল সমরেশের বই
বইপ্রেমী বাঙালির উচ্ছ্বাস-উৎসবের ক্ষেত্র অমর একুশে গ্রন্থমেলা। অথচ দুই সপ্তাহ পর আসছে মেলায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার তো দূরের কথা স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এবারের মেলায় কোনো বিদেশি লেখকের বই বিক্রি করা যাবে না। এ নীতিমালা ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যের সেরা লেখকদের সাহিত্য সম্ভার থেকে বাংলাদেশি পাঠকদের বঞ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলা একাডেমী। বাংলা একাডেমী প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে একাডেমী চত্বরে অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন করে। এবার প্রকাশিত অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৩-এর নীতিমালা ও নিয়মাবলির ৬.১ ধারায় বলা হয়, 'অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশকরা কেবল বাংলাদেশে মুদ্রিত ও প্রকাশিত বাংলাদেশের লেখকদের মৌলিক/ অনূদিত/ সম্পাদিত/ সংকলিত বই বিক্রি করতে পারবেন।' এই ধারা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের কোনো লেখকেরই বই একুশে গ্রন্থমেলায় বিক্রি হবে না। সেটি বাংলাদেশের কোনো প্রকাশক প্রকাশ করলেও না। বাংলাদেশের পাঠকরা এই একটি মাসকে ঘিরেই তাদের পছন্দের বাংলা লেখকদের বই কেনার প্রস্তুতি নেন। বছরের অন্য সময় বই কেনায় তেমন কোনো আগ্রহ না থাকলেও এ মাসে প্রত্যেক পাঠকেরই আলাদা বাজেট থাকে। প্রকাশকদের অনেকে বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ, সুনীল, সমরেশের লেখার মধ্য দিয়ে আধুনিক বাঙালি পাঠকের মননশীলতা গড়ে উঠেছে। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তাদের বই কিনতে না পারলে পাঠকরা পাইরেসি করা বই কেনার প্রতি ঝুঁকে পড়বেন। বাংলা ভাষার জন্য আত্দদানকারী শহীদদের স্মরণে ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বাংলার শ্রেষ্ঠ লেখকদের বই নীতিমালা করে নিষিদ্ধ করায় কঠোর সমালোচনায় পড়েছে বাংলা একাডেমী। বইয়ের প্রচার প্রসারে যে মেলার আয়োজন সেখানে নিয়ম করে নন্দিত লেখকদের বই নিষিদ্ধ করার ঘটনা একাডেমীর স্ববিরোধিতা বলে মনে করছেন অনেকে। একাধিক লেখক বলেছেন, এ নিয়ম করার ফলে বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষ পাইরেসিকে উৎসাহিত করেছেন। প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গসহ বিশ্বের জনপ্রিয় লেখকদের সেরা বইগুলো গ্রন্থমেলায় সামনের ফুটপাতে সাজিয়ে রেখে বিক্রি করা হয়। এসব বইয়ের অধিকাংশই বাংলাদেশে মুদ্রিত এবং পাইরেসি কপি। একাডেমীর স্টলে রবীন্দ্রনাথ, সুনীল, সমরেশের বই কিনতে না পারলে পাঠকরা বাইরের ফুটপাত থেকেই সেগুলো কিনবেন। কবি রফিক আজাদ বলেন, বিদেশি লেখকের বইমেলায় বিক্রি করা না গেলে আমরা তাদের বই পাব কীভাবে? এটা মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথকে তো আইন করে বাংলা সাহিত্য থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। লেখকের কোনো দেশ-কাল থাকে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর