বুধবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩ ০০:০০ টা

নির্বাচন থেকে খালেদাকে দূরে রাখতেই মিথ্যা মামলা : বিএনপি

নির্বাচন থেকে দূরে রাখতেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে বাইরের লোক সাহায্য-সহযোগিতা করেছে। এখানে সরকারের কোনো টাকা নেই। সেই টাকা যথাযথভাবে খরচ হয়েছে। মামলাটি আমলে নিয়ে সরকার খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার ষড়যন্ত্র করছে। অবিলম্বে এ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নইলে আইনের পাশাপাশি রাজনৈতিক লড়াইও চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। গতকাল বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়েরের তীব্র সমালোচনা করেন বিএনপির সমন্বয়ক। তিনি বলেন, নীচু মানসিকতার সরকার মির্জা ফখরুলকে আরও একটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট করে নীচু মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। অবিলম্বে ফখরুলসহ গ্রেফতার হওয়া সব নেতার মুক্তি দাবি করেন তিনি। বাম মোর্চার ডাকা শন্তিপূর্ণ হরতালে মরিচের গুঁড়া ও লাঠিচার্জ করার তীব্র নিন্দা জানান তরিকুল। ১৮ দলের মানবপ্রাচীর সফল হয়নি_সরকারি দলের নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তরিকুল ইসলাম বলেন, তাদের চোখে ছানি পড়েছে। তাই তারা জোটের মানবপ্রাচীরে জনতার ঢল দেখতে পারেননি। তাদের চোখ অপারেশন করা দরকার। মানবপ্রাচীরে জনভোগান্তি হয়েছে বিভিন্ন মহলের এমন অভিযোগে তিনি বলেন, সরকারই এদেশের ১৬ কোটি মানুষকে চরম ভোগান্তিতে রেখেছে। ব্যবসায়ীরা দুই নেত্রীকে সংলাপের আহ্বান জানালে সাড়া দেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যদি একমুখী হয়ে আহ্বান জানান তাতে সাড়া দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তারা যদি দলমতের ঊধের্্ব ওঠে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে সংলাপ ডাকে তাতে আমাদের গুলিস্তানে যেতেও আপত্তি নেই। ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তরিকুল বলেন, আমরা রাজপথে কালো পতাকা মিছিল, মানবপ্রাচীরের মতো নিরীহ কর্মসূচি দিচ্ছি। তাতে লাখো মানুষ সমর্থন দিয়ে সরকারের প্রতি গণঅনাস্থা জানাচ্ছে। কিন্তু তারপরও সরকারের চৈতন্য উদয় হচ্ছে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি চাপ প্রয়োগ করতে তাদের কাছে আহ্বান জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতাদের মধ্যে মির্জা আব্বাস, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহীন, মীর সরফরত আলী সপু, রফিক শিকদার, জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, এলডিপি নেতা শাহাদাত হোসেন সেলিমসহ জোট নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সরকারের সামনে করুণ পরিণতি : মওদুদ বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের সামনে করুণ পরিণতি অপেক্ষা করছে। এটা বুঝতে পেরে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে ক্ষমতায় থাকার আয়োজন করছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী পরিষদের উদ্যোগে গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। দ্রব্যমূল্য বাড়ার কারণে ক্রয়ক্ষমতা নাগালের বাইরে চলে গেছে। তেল-গ্যাস-বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তিনি বলেন, সম্মান থাকতেই সরকারের উচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল করা। এটা না করা পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলতেই থাকবে। ধীরে ধীরে জনগণকে সম্পৃক্ত করে আরও বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর