সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ফিরে পেলেন ২০ হাজার কোটি রুপির সম্পদ

ভারতের ফরিদকোটের সাবেক মহারাজা হরিন্দর সিং ব্রারের দুই কন্যা ফিরে পেলেন ২০ হাজার কোটি রুপি মূল্যের সম্পত্তি। দেশটির একটি আদালত ৩২ বছরের পুরনো একটি উইলকে 'জাল' ও 'অবৈধ' ঘোষণা করে এ সম্পতি মহারাজার উত্তরাধিকারকে অর্পণ করেছে।

গতকাল টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, এই বিশাল সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নয়াদিলি্লর কোপার্নিকাস মার্গে অবস্থিত প্রাসাদোপম ফরিদকোট হাউস, ফরিদকোটে একটি প্রাসাদ কমপ্লেঙ্ ও একটি কেল্লা, চণ্ডীগড়ের মনি মাজরা এলাকায় একটি কেল্লা, একটি রোলস রয়েসসহ কয়েকটি ভিন্টেজ কার, ফরিদকোটে ২০০ একর জমির ওপর একটি এয়ারড্রোম বা বিমানশালা, হায়দরাবাদ ও দিলি্লতে ভূ-সম্পত্তি, ১০০০ কোটি রুপি মূল্যের স্বর্ণ ও অন্যান্য অলঙ্কার এবং আরও অনেক কিছু। রিয়াল এস্টেট বিশেষজ্ঞ ও হিসেববিদরা বলছেন, ফিরে পাওয়া সম্পদের মোট মূল্য দাঁড়াবে ২০ হাজার কোটি রুপির বেশি। মনি মাজরা ফোর্টটি ৩৫০ বছরের বেশি পুরনো, এটি খুব একটা ভালো অবস্থা নেই। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভের পর সাবেক মহারাজাকে এই সম্পত্তি রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

রাজার এই সম্পতি ১৯৮১ সালে মেহারওয়াল খেওয়াজি ট্রাস্টকে দান করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এবং মহারাজা ১৯৮৯ সালে মারা গেলে এর সব সম্পতি ওই ট্রাস্ট দখল করে নেয়। কিন্তু ১৯৯২ সালে মহারাজার মেয়ে অমৃত কাউর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ২২ বছর পর দিলি্লর মুখ্য বিচারিক হাকিম রজনিশ কুমার বৃহস্পতিবার আদেশ দেন, ১৯৮১ সালে কৃত উইলটি 'জাল ও বানোয়াট'। এই রায়ের ফলে অমৃত কাউর ও তার কলকাতাবাসী বোন দীপিন্দর কাউর সাবেক মহারাজার বিপুল সম্পত্তির মালিক হবেন। মহারাজার তৃতীয় কন্যা মাহীপিন্দর কাউর ২০০১ সালে রহস্যজনকভাবে মারা যান। তিনি চিরকুমারী ছিলেন। ব্রারের এক পুত্র সন্তানও ছিল। তার নাম হরমহিন্দর সিং। তিনি ১৯৮১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এ ঘটনায় সাবেক মহারাজা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

অমৃত কাউর সাংবাদিকদের বলেন, বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার (বাবার) এক কর্মচারীরা উইলটি জাল করেন। এই জাল উইল অনুযায়ী মহারাজার যাবতীয় সম্পত্তি মেহারওয়াল খেওয়াজি ট্রাস্টকে দান করা হয়েছে। এই ট্রাস্টটি ১৯৮২ সালে নিবন্ধিত হয়। সাবেক মহারাজার কয়েকজন কর্মচারী এই ট্রাস্টের বোর্ড সদস্য। মহারাজার দুই মেয়েকে মাসে মাত্র ১২০০ ও এক হাজার রুপি বেতনে ট্রাস্টের চেয়ারপারসন ও ভাইস চেয়ারপারসন করা হয়েছে। ১৯৮৯ সালে মহারাজার মৃত্যুর পর ট্রাস্টিরা তার যাবতীয় সম্পদের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। অমৃত কাউর এই উইলটি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ট্রাস্টিরা তার বাবার মানসিক বিষাদগ্রস্ত অবস্থায় জোরপূর্বক এই উইলে তার স্বাক্ষর নিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, উইলটি যখন করা হয় তখন তার মানসিক অবস্থা সুস্থ ছিলেন না। অমৃত কাউর বলেন, জাল উইলটিতে মহারাজার স্ত্রী ও মাকে সম্পূর্ণভাবে বাদ রাখা হয়েছে। অথচ তারা ১৯৮১-৮২ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। আদালতের এই রায়ের পর ট্রাস্টিরা উচ্চতর আদালতে আপিল করতে পারেন বলে বিবাদীর আইনজীবীরা জানিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর