শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৩ ০০:০০ টা

ছিনতাইকারীরা বাইরে, বাদী জেলখানায়

হুন্ডির টাকা লুটের সাম্প্রতিক এক মামলায় সব আসামি জামিনে বেরিয়ে এলেও বাদী আমান মিয়া এখনো জেলহাজতে। রাজধানীর কোতোয়ালি থানা এলাকায় গত ৫ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে। ক্যান্টনমেন্ট থানার এসআই আবু কাইয়ুম তার তিন সহযোগীকে নিয়ে সিভিল ড্রেসে সশস্ত্র অবস্থায় তাঁতীবাজার এলাকায় হাজির হন। সেখানে আমান মিয়ার বাসায় চড়াও হয়ে তারা ৩১ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন। কিন্তু ডাকাত সন্দেহে এ সময় আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশ সদস্যদের টাকাসহ হাতেনাতে আটক করে গণপিটুনি দেন।
ঘটনাস্থলের পাশেই অবস্থান করা বংশাল থানার সিভিল টিমের এসআই মাহমুদুল হাসান তৎক্ষণাৎ গণপিটুনির শিকার পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেন। তিনি এ সময় আমান মিয়ার সঙ্গে গোপনে সমঝোতার মাধ্যমে পুলিশ সদস্যদের রক্ষার চেষ্টা চালালেও সফল হননি। ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে আবু কাইয়ুমসহ তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় ছিনতাই মামলা রুজু করা হয়। পাশাপাশি লালবাগ জোনের ডিসি হারুন অর রশিদের নির্দেশে মামলার বাদী আমান মিয়াকেও ৫৪ ধারায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে আটক করা হয়।
ছিনতাই মামলার আসামিরা পুলিশ সদস্য হওয়ায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই তড়িঘড়ি আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে বাদী আমান মিয়াকে রিমান্ডে নিয়ে চলতে থাকে কড়া জিজ্ঞাসাবাদ। আমান মিয়ার স্ত্রী রোজি বেগম অভিযোগ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'পুলিশের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা করার জের হিসেবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। একাধিক মামলা দায়েরেরও পাঁয়তারা চলছে।' সন্দেহের ধারায় আটক হলেও আমান মিয়ার জেলহাজত থেকে বের হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেও মন্তব্য করেন রোজি বেগম।
এদিকে হুন্ডির টাকা ছিনতাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, কোতোয়ালি থানার অপারেশন অফিসার রফিকুল ইসলাম মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যেই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, নিয়মনীতি উপেক্ষা করে, অভিযোগপত্র দাখিলের পরপরই সব আসামি জামিনে বেরিয়ে যান।
জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, 'জরুরি ভিত্তিতে চার্জশিট দেওয়ার জন্য ডিসি স্যারের কঠোর নির্দেশ ছিল। তিনি নিজে তদারকিও করেছেন।' এক প্রশ্নের জবাবে রফিকুল বলেন, 'পুলিশের বিরুদ্ধে ছিনতাই মামলা দায়েরকারী আমান মিয়ার বিরুদ্ধে হুন্ডি ব্যবসা পরিচালনাসহ বেশ কয়েকটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। তার অন্যান্য অপরাধের ব্যাপারেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তবে তার জামিনের এখতিয়ার আদালতের, এ ব্যাপারে পুলিশের কোনো ভূমিকা নেই।'

সর্বশেষ খবর