ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক চারটি সংঘর্ষে চারজন নিহত ও নারীসহ কমপক্ষে শতাধিক আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ৩০টি বাড়িঘর ও সাত-আটটি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় দাঙ্গাবাজরা। পুলিশ সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।
জানা যায়, গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর গ্রামে পূর্বশত্রুতার জের ধরে ইকবাল চেয়ারম্যান ও নাসিরের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা খলিলুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাদেকপুরের একই গোষ্ঠীর মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর জের ধরে সকাল ১০টায় দুই পক্ষের চার-পাঁচশ লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। আহতদের মধ্যে উভয় পক্ষের দুজন সদর হাসপাতালে আনার পথে মারা যায়। এরা হলো শামসুল ইসলাম (৪৫) ও ইসমাইল (৩৮)। অন্যদের সদর হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পেঁৗছে ১০ রাউন্ড কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছিল।
এ ছাড়া ঈদের দিন বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বেহাইর গ্রামের কালা গাজীর গোষ্ঠীর একটি ছেলেকে মারধর করে নাগরবাড়ির ছেলেরা। এর জের ধরে গতকাল সকালে নাগরবাড়ির পক্ষে আম্বরবাড়ি, রহমতপাড়া, আদলের বাড়িসহ ছয়টি গোষ্ঠীর কয়েকশ মানুষ সকাল ৬টায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কালা গাজী গোষ্ঠীর লোকজনের ওপর হামলা চালায়। সংঘর্ষ চলাকালে আটটি দোকানসহ কালা গাজীর গোষ্ঠীর ৩০টি বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও বেশ কয়েকটি গরু ও মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে নারীসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে। আহতদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে অর্ধশত রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে।গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে কবর খোঁড়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ১০ জন আহত হয়েছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মতি মিয়া (৭০) মারা যায়। পরদিন সকালে কবর খুঁড়তে গেলে একই গোষ্ঠীর জমসিদ মিয়া ও তার লোকজন বাধা দেয়। এর জের ধরে জমসিদ মিয়ার নেতৃত্বে কবর খোঁড়ার সরঞ্জাম দিয়ে হামলা চালিয়ে ১০ জনকে আহত করে। আহতদের সরাইল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
অন্যদিকে গত মঙ্গলবার ভোর রাতে শহরের দাসপাড়ায় প্রতিমা বিসর্জন শেষে অজিত দাসের পুত্র অনু দাস ও ছাত্রলীগ কর্মী উজ্জ্বলের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সন্ত্রাসী কমপক্ষে ১০ জনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। আহতদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত সজল বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করে।