শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৩ ০০:০০ টা

রাজধানীতে চার অগ্নিকাণ্ড

খোলা আকাশের নিচে মানুষ

রাজধানীর উত্তরা, পুরান ঢাকা, সোনারগাঁও হোটেল ও বউ বাজার বস্তিতে আগুন লেগেছে। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে সোনারগাঁও হোটেলের তৃতীয় তলায় আগুন লাগে। আগুনের কুণ্ডলী ও ধোঁয়া দেখে হোটেলের অতিথি ও লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ফলে লিফট চলাচল ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। এতে পর্যটক ও অতিথিদের দুর্ভোগের মাত্রাও বেড়ে যায়। খবর পেয়ে দমকলের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। দমকল কর্মীরা রাত ৩টা ৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। দমকল কর্মকর্তারা জানান, তিন তলার মেশিনরুমে প্রথম আগুন লাগে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটনা ঘটেনি। বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ওই কর্মকর্তারা জানান।

এদিকে, আরেক অগ্নিকাণ্ডে উত্তরার একটি ওয়াশিং প্লান্টের মালামাল পুড়ে গেছে। দক্ষিণখান গার্লস স্কুল রোড এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে বৈশাখী ওয়াশিং প্লান্টে আগুন লাগে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এতে ওই প্লান্টের মেশিনসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে। টঙ্গী ফয়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভান। টঙ্গী ফয়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাকির হোসেন জানান, বেলা সোয়া ১টার দিকে বন্ধ কারখানায় বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি বলে জানান তিনি।

একই দিন অন্য এক অগ্নিকাণ্ডে পুরান ঢাকার ইসলামবাগের বাগানবাড়ি এলাকায় প্লাস্টিক সামগ্রীর চারটি গুদাম পুড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মকর্তা নিলুফার ইসয়ামিন জানান, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর ছয়টি ইউনিট গিয়ে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানান তিনি।

ফায়ার ব্রিগেডের উপ-পরিচালক (অপরাশেন্স) ভরতচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আগুনে চারটি গুদাম পুড়ে গেছে। বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুন লাগে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিটি টিনশেড গুদামে ৫০-৬০ হাজার টাকার মালামাল ছিল বলে মালিকরা দাবি করেছেন। আবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন গুদামের কর্মচারী শুক্কুর আলী জানান, তাদের গুদামে খেলনাসহ বিভিন্ন প্লাস্টিক সামগ্রী মজুদ করা ছিল। আরেক গুদামের মালিক আলী আকবর বলেন, গুদামের পেছনে নদীর ধারে ময়লার স্তূপে আগুন দেওয়া হয়েছিল। এলাকাভিত্তিক দখলদারীকে কেন্দ্র করে সেখান থেকে কেউ গুদামে আগুন দিয়ে থাকতে পারে।

খোলা আকাশের নিচে হাজারো মানুষ : দুদিন আগেও যেখানে ছিল সারি সারি ঘর। ছিল মানুষের কোলাহল। মাত্র এক ঘণ্টার আগুনে সেই কোলাহলমুখর কয়েক শ ঘর এখন ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়েছে। ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের পর সেখানকার হাজারো মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। বস্তিবাসীরা জানিয়েছেন, ঈদের কারণে বস্তির অনেক লোকজন গ্রামের বাড়ি ও অনেকে ঘরের বাইরে থাকায় তারা হতাহত হওয়া থেকে রক্ষা পান।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, বস্তিতে দেড় থেকে দুই হাজার মানুষের বসবাস ছিল। রাত ৯টায় বস্তিতে আগুনের সূত্রপাত হলে এক ঘণ্টার চেষ্টায় তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুনের লেলিহান শিখা গ্রাস করে নিয়েছে বস্তির সবগুলো ঘর। বস্তির লোকজনের জন্য সিটি করপোরেশন থেকে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হলেও কোনো সাহায্য পাওয়া যায়নি বলে বস্তিবাসীরা জানায়।

 

 

সর্বশেষ খবর