বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক মামলার অন্যতম আসামি জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এসএম মজিবুর রহমানের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারার পরীক্ষায় এ দাবি করেন তিনি। তবে এ বিষয়ে নিজামী লিখিত বক্তব্য ও সাফাই সাক্ষীর তালিকা দেবেন বলে জানান এবং বুধবার পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করেন আদালত।
শুরুতেই সরকারি ও মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক সংক্রান্ত দুটি মামলার অভিযোগ পড়ে শোনান। এ সময় নিজামী নির্দোষ কিনা এবং তার কোনো সাফাই সাক্ষী বা লিখিত বক্তব্য আছে কিনা আদালত তা জানতে চান। জবাবে দুই মামলাতেই নিজামী নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সাফাই সাক্ষ্য দেওয়ার কথা বলেন। এ সময় আদালত মঙ্গলবারের মধ্যে সাফাই সাক্ষীর তালিকা জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। পরে মামলার কার্যক্রম বুধবার পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন আদালত বলে পিপি জানান।
নিজামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ গতকাল আসামি পক্ষে ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তিনি নিজামীকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, 'রাজনৈতিক কারণেই জামায়াতে ইসলামীর আমিরকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জড়ানো হয়েছে।' এর আগে রবি ও সোমবার আসামি পক্ষের আরও দুই আইনজীবী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। আজ প্রসিকিউশনের পাল্টা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কথা হয়েছে। হরতালের কারণে আসামি পক্ষের সিনিয়র আইনজীবীরা টানা চার দিন অনুপস্থিত থাকায় ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল নিজামীর মামলার কার্যক্রম বন্ধ করে রায় অপেক্ষমাণ রাখেন। আসামি পক্ষ ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করে। পরে ট্রাইব্যুনাল আবারও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ দেন। নিজামীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উসকানি, সহযোগিতা, পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র ও বুদ্ধিজীবী হত্যার মতো ১৬টি অভিযোগ রয়েছে।সাঈদীর আপিলের শুনানি : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিলের ওপর ১৪তম দিনের মতো শুনানি হয়েছে। প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে গতকাল আসামি পক্ষের আইনজীবী এস এম শাহজাহান শুনানি করেন। সাঈদীকে ২৮ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
খন্দকার মাহবুবের জবাব দাখিল : আদালত অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে লিখিত জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। তার পক্ষে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে এটা জমা দেন আইনজীবী তাজুল ইসলাম। আজ এ বিষয়ে শুনানি হবে। মাহবুবের বিরুদ্ধে ৬ অক্টোবর আদালত অবমাননার অভিযোগে শোকজ নোটিস জারি করেন ট্রাইব্যুনাল-১।