সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

ভোটে জিতলেও মামলাই কাল হচ্ছে বিএনপি জামায়াত নেতাদের

ভোটে জিতলেও মামলাই কাল হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের। মামলার জালে বন্দী জামায়াতে ইসলামী থেকে নির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা ক্ষমতা পাবেন কিনা তা এখন অনিশ্চিত। নির্বাচিতদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে তাদের আইনের আওতায় নিতে শুরু করায় এ অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে শপথ নিতে যাওয়া পাঁচ চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যানকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একইভাবে বিএনপি থেকে নির্বাচিত অনেক চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে একই ভাগ্য বরণ করতে হবে। মামলার কারণে তারাও শপথ নিতে পারছেন না। এ অবস্থায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শপথ নিতে না পারলে এবং শপথ নেওয়ার পর প্রথম সভায় সভাপতিত্ব করতে না পারলে বর্তমান পরিষদই দায়িত্ব চালিয়ে যাবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, এবার উপজেলা পরিষদে দেশের ৩৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জামায়াত মনোনীত প্রার্থীরা। একই দল থেকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন ৩০ জন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের শপথ শুরু হয়। কিন্তু শপথ নিতে গিয়ে ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রহমান আবদার, বোদা উপজেলা চেয়ারম্যান শফিউল আলম শফি, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর বাসেত সাজ্জান। জানা গেছে, বিগত মহাজোট সরকারের শেষ সময়ে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে করা মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মহাজোট সরকারের শেষ সময়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতাদের বিচারের রায় ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির ব্যাপক সহিংসতা চালায়। এ সময় জামায়াতের স্থানীয় নেতাদের নেতৃত্বে সরকারি কাজে বাধা, সরকারি দফতর ভাঙচুর ও অগি্নসংযোগ, পুলিশের ওপর হামলাসহ সহিংস তাণ্ডব চালানো হয়। বিশেষ করে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগড়া, সীতাকুণ্ড, সাতক্ষীরার প্রায় সবকটি উপজেলা, উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, দক্ষিণাঞ্চলের লক্ষ্মীপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবির। এবার এসব জেলার বিভিন্ন উপজেলায় জামায়াত থেকে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নির্বাচিত এসব জনপ্রতিনিধিরা প্রায় প্রত্যেকেই সহিংস ঘটনায় দায়েরকৃত একাধিক মামলার আসামি। এ কারণেই এখন তাদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া শুরু করেছে পুলিশ।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচিতরা শপথ নিতে না পারলে এবং প্রথম সভায় উপস্থিত হতে না পারলে আইনানুযায়ী তাদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে গণ্য করার কোনো সুযোগ নেই। শপথ নেওয়া ও প্রথম সভায় উপস্থিত বাধ্যতামূলক। কিন্তু নির্বাচিতরা শপথ নিতে না পারলে বর্তমান পরিষদই তাদের শপথ নেওয়ার আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা শাখার যুগ্ম-সচিব আকরাম আল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচিতরা যতক্ষণ পর্যন্ত শপথ নিতে না পারবেন ততক্ষণ পর্যন্ত তারা চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে গণ্য হবেন না। তিনি বলেন, আইনে স্পষ্ট আছে পরিষদের মেয়াদ প্রথম সভা থেকে পাঁচ বছর। এখন যদি নির্বাচিতরা শপথ না নিতে পারেন তাহলে বর্তমানরাই দায়িত্বে থাকবেন।

সর্বশেষ খবর