শনিবার, ১৭ মে, ২০১৪ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক মামলা নিয়ে 'আটক বাণিজ্য'

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সহিংসতার সময় পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের অভিযোগ এনে মিজান নামে এক যুবককে ধরে আনে আকবর শাহ থানা পুলিশ। এরপর অমানুষিক নির্যাতন চলে ওই যুবকের ওপর। পরে তার পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে পুলিশের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হয়- নইলে মিজানকে আরও ১০ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। শেষ পর্যন্ত মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ছাড়া পান মিজান। শুধু মিজান নন, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনায় দায়ের করা মামলা নিয়ে এভাবে আটক বাণিজ্যে মেতে উঠেছে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কয়েকজন সদস্য। এসব মামলায় গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে শত শত মানুষকে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার মাসুদ উল হাসান জানান, 'কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের প্রমাণ পেলে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

তবে আটক বাণিজ্যের কথা স্বীকার করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএমপির এক কর্মকর্তা বলেন, 'নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোকে পুঁজি করে কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য আটক বাণিজ্য করছে। তবে প্রয়োজনীয় প্রমাণের অভাবে দোষী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।' সিএমপি সূত্রে জানা যায়, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় সিএমপির ১৬ থানায় পুলিশের ওপর হামলা, অগি্নসংযোগ, গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধাদান, সন্ত্রাস দমন এবং জননিরাপত্তা আইনের ধারায় ১৬২টি মামলা দায়ের করে পুলিশ। এগুলোয় বিএনপি-জামায়াতসহ ১৯-দলীয় জোটের ৩০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। এসব ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি ৪১, পাঁচলাইশ ১৬, চান্দগাঁও ১৪, পাহাড়তলী ১৪, বাকলিয়া ১২, আকবরশাহ ১০, ডবলমুরিং ৯, বন্দর ৭, বায়েজীদ বোস্তামী ৬, হালিশহর ৬, খুলশী ৫, চকবাজার ৩, ইপিজেড ৩ এবং সদরঘাট, পতেঙ্গা ও কর্ণফুলী থানায় ২টি করে মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগ- এসব মামলা পুঁজি করে আটক বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। তারা নিরীহ লোকজনকে থানায় ধরে এনে সহিংসতার মামলার গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা। অনেকে পুলিশের চাহিদামতো টাকা দিতে না পারায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর