শনিবার, ১৭ মে, ২০১৪ ০০:০০ টা
কেমন বাজেট চাই

মূল চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা-নিরাপত্তা

সঙ্গীতা আহমেদ

মূল চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা-নিরাপত্তা

আগামী ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জনগণের নিরাপত্তা ও সুশাসন নিশ্চিত করা মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিডব্লিউসিসিআই) সভাপতি সঙ্গীতা আহমেদ। তার মতে, রাষ্ট্রের সব পর্যায়ে সুশাসন নিশ্চিত, দুর্নীতি বন্ধ, আইন ও ক্ষমতার অপব্যবহার সরকার একা বন্ধ করতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে সরকারের পাশে সবাইকে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

আসন্ন বাজেটকে সামনে রেখে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশের অন্যতম এই নারী উদ্যোক্তা বিভিন্ন সুপারিশমালা উপস্থাপন করে বলেন, আগামী বাজেটে সবচেয়ে বেশি দরকার সুশাসন ও স্বচ্ছতা। এ ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু প্রকল্পের অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে যেহেতু কৃষিতে নজর কম দেওয়া হয়েছিল, তাই আগামী বাজেটে কৃষিতে জোরদার পদক্ষেপ নিতে হবে। আগামী বাজেটে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে সরকারের কাছে পরামর্শ তুলে ধরে সঙ্গীতা আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো দ্রুত নির্মাণ ও সব ধরনের জ্বালানি সমস্যা সমাধান করতে হবে। কেননা দেশের সব ধরনের ব্যবসায়ীরা গত একটি বছর অস্থিতিশীল পরিবেশে নামমাত্র ব্যবসা করেছেন। তাদের লোকসানের দিকটি কীভাবে পোষানো যাবে, সেই নির্দেশনাও বাজেটে দাবি করেন তিনি। বিডব্লিউসিসিআইর এই সভাপতি বলেন, নারী বা নতুন উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা নির্ধারণ করা হোক। চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরের বাজেটেও নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকার তহবিল বরাদ্দ অব্যাহত রাখা হোক। একই সঙ্গে বাজেটের প্রতিটি খাতে নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। পাশাপাশি পৃথক নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ণেরও দাবি তার। তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়াতে হবে। যেহেতু একজন উদ্যোক্তা ঋণ নিয়ে প্রথম মাসেই ব্যবসা সচল করতে পারেন না। ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধের সময়সীমা তিন থেকে ছয় মাস পরে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ১৫ শতাংশ এসএমই ঋণ বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণের সুদের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হোক। সঙ্গীতা আহমেদ বলেন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য পৃথক শিল্প পার্ক স্থাপন করতে হবে। প্রত্যেক জেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য রিসোর্স সেন্টার স্থাপন করা হোক। নারীরা যেসব খাতে নিয়োজিত সেসব খাতকে উৎসাহিত করতে উন্নয়ন ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ভুমিকা পালনকারী খাতগুলোতে (যেমন কৃষি ও শিল্প) অধিক নারীমুখী প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হোক। হস্তশিল্প, দর্জিবিদ্যা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ইত্যাদিসহ কারিগরি, গার্মেন্ট ব্যবসা প্রভৃতি ক্ষেত্রে নারীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পলিটেকনিক, তথ্য ও প্রযুক্তি স্কুল এবং কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রকল্প নেওয়ার মাধ্যমে এ বরাদ্দ বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। বিডব্লিউসিসিআই সভাপতি বলেন, বিপণন ও নেটওয়ার্ক বাড়াতে এবং উপযুক্ত প্রশিক্ষণ খাতে প্রকল্প নেওয়া প্রয়োজন। নারীদের ব্যবসায়িক সক্ষমতা বাড়াতে অধিক প্রকল্প নিতে হবে। কেননা নারী উদ্যোক্তারা যেন কারিগরি, আর্থিক ও অন্যান্য সেবা প্রাপ্তির (গ্যাস, বিদ্যুৎ, বিপণন) দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেন।

 

সর্বশেষ খবর