শনিবার, ১৭ মে, ২০১৪ ০০:০০ টা

প্রকল্প আছে বরাদ্দ নেই

অর্থাভাবে ফাইলবন্দী সুষম উন্নয়ন পরিকল্পনা

অর্থ সংকটে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করে পরিকল্পনা কমিশন। এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত অগ্রাধিকার প্রকল্পে পর্যন্ত অর্থ বরাদ্দ দিতে পারছে না- এমন ঘটনাও ঘটছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে এ ধরনের বহু প্রকল্প রয়েছে যেগুলো এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত কিন্তু কোনো বরাদ্দ নেই। ফলে মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও প্রকল্পের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সুষম উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে দেশে সামগ্রিক সুষম উন্নয়ন শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। একে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। এর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে মার্চ-২০১৪ থেকে ফেব্রুয়ারি-২০১৬ পর্যন্ত। শুধু তাই নয়, একে সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশন থেকে। চলতি অর্থবছরের বাজেটের অগ্রাধিকার খাত হচ্ছে ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন। এ প্রকল্পটি এ খাতেরই অন্তর্ভুক্ত। তবে এ প্রকল্পের বিপরীতে চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি। প্রকল্পের পরিকল্পনাপত্রে বলা হয়েছে- প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে সম্পূর্ণ বৈদেশিক অনুদানের মাধ্যমে। অর্থবছরের ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো উন্নয়ন সহযোগী এতে অর্থায়নের আগ্রহ দেখায়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে কিন্তু কারও কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া যাওয়া যায়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে ফাইলবন্দী হয়ে পড়ে আছে সরকারের সুষম উন্নয়ন পরিকল্পনা। অর্থ বিভাগ ও গণপূর্ত অধিদফতরে পাঠানো এক প্রতিবেদনের সূত্র ধরে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনটি পাঠিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬ কোটি ৬০ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছরই ৪২ কোটি ৮০ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন বলে মন্ত্রণালয় থেকে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অর্থ বিভাগ এ প্রকল্পটির জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ দিতে পারছে না। ফলে সরকারের সুষম উন্নয়ন কার্যক্রমের এখনো চূড়ান্ত কোনো পরিকল্পনাই করতে পারেনি মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। ফলে প্রকল্পের কাজও শুরু করা যায়নি। সূত্র জানায়, এ প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সমগ্র দেশের সুষম উন্নয়নের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি মাস্টার প্ল্যান প্রস্তুত, নগর ও অঞ্চল উন্নয়নের সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন, দেশে সর্বস্তরে প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা পর্যালোচনা, বিদ্যমান শিল্প কারখানাগুলোর স্থানিক বিস্তার ও নতুন শিল্প কারখানার জন্য স্থান ও অঞ্চল চিহ্নিতকরণ, বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক বৈষম্য বিশ্লেষণ ও তা দূরীকরণে পরিকল্পনা প্রণয়ন। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে অপরিকল্পিত শিল্পের বিস্তার রোধ হবে। জনসংখ্যা ও ভূমি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন হবে বলে মনে করে সরকার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ সচিব ফজলে কবীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়ার আগেই অর্থ বরাদ্দের কথা মাথায় রাখা হয়। এ প্রকল্পের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। তবে নানা কারণে বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

সর্বশেষ খবর