শিরোনাম
বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা

জলপ্রপাতে মুগ্ধ বিদেশিরা

জলপ্রপাতে মুগ্ধ বিদেশিরা

প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি হাম হাম জলপ্রপাত। চারদিকে সবুজে ঘেরা সুউচ্চ পাহাড়। পাহাড়ের ওপর থেকে তিন স্তরে গড়িয়ে পড়ছে ঝরনাধারা। আর পাহাড়ের পাদদেশে পড়া সেই ঝরনাধারা থেকে উৎপত্তি হচ্ছে তীব্র রকমের 'হাম হাম' শব্দ। স্থানীয়দের মুখে প্রচলিত আছে- এ শব্দ থেকেই নাকি জলপ্রপাতটি 'হাম হাম জলপ্রপাত' নামে পরিচিতি পেয়েছে।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ত্রিপুরা সীমান্তঘেঁষা রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কুরমা বন বিট এলাকায় এ প্রাকৃতিক জলপ্রপাতটির অবস্থান। বছরপাঁচেক আগে কয়েকজন ভ্রমণপিপাসু তরুণের প্রথম নজরে আসে এ জলপ্রপাতটি। এর আগ পর্যন্ত হাম হাম তার মায়াময় রূপ লুকিয়ে রেখেছিল। প্রকৃতিসৃষ্ট এ জলপ্রপাতটি দেখতে এখন প্রতিদিনই বিদেশি পর্যটকদের ঢল নামে এখানে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে হাম হাম পৌঁছে জলপ্রপাতের শীতল পানিতে গা ভাসিয়ে নিচ্ছেন পর্যটকরা। তবে এ জলপ্রপাতটিকে ঘিরে পর্যটকদের জন্য সরকারিভাবে এখনো কোনো অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়নি। শতভাগ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই এখনো এখানে বিদ্যমান আছে। আর বর্ষা মৌসুমে এ জলপ্রপাতটি যেন তার পুরো যৌবন ফিরে পায়। হাম হাম যাওয়ার পথে চোখে পড়বে রাজকান্দি সংরক্ষিত বনের সারি সারি জারুল, কদম, চিকরাশি আর কলা গাছ। এরই ফাঁকে ফাঁকে রংবেরংয়ের প্রজাপতির চঞ্চল ওড়াউড়ি। খানিকটা পথ এগিয়ে গেলেই ডুমুর আর বেতবাগানে নজর কাড়বে অসংখ্য চশমাপরা হনুমানের দুষ্টুমি। এ ছাড়া রয়েছে মুলি, মির্তিঙ্গা, ডলুসহ বিভিন্ন জাতের বাঁশ।

আর জলপ্রপাতের দুই কিলোমিটার আগে থেকেই কানে আসবে পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া অবিরাম ঝরনাধরার 'হাম হাম' শব্দ। হাম হাম জলপ্রপাতে পর্যটকদের নিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী সিএনজি-চালক পরিতোষ দেব বলেন, তিনি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিয়ে অনেক পর্যটন এলাকায় গিয়েছেন। কিন্তু হাম হামের মতো সৌন্দর্য কোথাও দেখেননি।

পর্যটকরাও হাম হামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন। হাম হাম যেতে কুরমা বন বিটের কলাবন এলাকা থেকে শুরু হবে দুই ঘণ্টার পায়ে হাঁটা পথ। জলপ্রপাতে যাওয়ার জন্য রয়েছে দুটি রাস্তা। একটি পাহাড়টিলা পেরিয়ে। আর অন্যটি দুই পাহাড়ের ভিতর দিয়ে বয়ে চলা ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকা সরু পথ। তবে যে পথেই যান না কেন, বর্ষা মৌসুমে যাওয়ার আগে পর্যটকদের একটি লাঠি হাতে নিয়ে যেতে হবে। পিচ্ছিল পথে ওই লাঠিই বন্ধুর কাজ করবে। পথিমধ্যে প্রকৃতির সবুজ নিসর্গ, ছোট ছোট পাহাড়ি ছড়ার হিম ঠাণ্ডা পানির পরশ ও বনাঞ্চলের বৃক্ষরাজির শীতলতা পর্যটকদের দেয় বাড়তি আনন্দ। কোনো এক ছুটির দিনে আপনিও ঘুরে যেতে পারেন হাম হাম জলপ্রপাতে। রেল বা সড়ক পথে শ্রীমঙ্গল এসে সিএনজি অটোরিকশা বা জিপ গাড়ি ভাড়া করে আপনি চলে যাবেন কমলগঞ্জের কলাবনে।

সেখান থেকে হেঁটে পৌঁছে যাবেন হাম হামে। যাওয়ার আগে সঙ্গে করে অবশ্যই শুকনো খাবার ও পানি নিয়ে যেতে ভুলবেন না। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম মিয়া বলেন, এ জলপ্রপাতের ব্যাপক প্রচার ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।

 

 

সর্বশেষ খবর