শিরোনাম
বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা
জাহাঙ্গীর হত্যা

স্ত্রীর বড় ভাইয়ের পরিকল্পনায় খুন

শুটার নাঈমসহ গ্রেফতার তিন

স্ত্রীর বড় ভাইয়ের পরিকল্পনায় খুন

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির হত্যাকাণ্ডে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন শুটার জান্নাতুল নাঈম, আমেনা খাতুন ও ইয়াসিন সরকার রাজন। সোমবার রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের বরাত দিয়ে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, স্ত্রীর বড় ভাই মিন্টুর পরিকল্পনায় খুন হয়েছেন জাহাঙ্গীর। মাহমুদ খান জানান, ময়মনসিংহের নবীনগর বাসস্ট্যান্ড থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আমেনা খাতুনকে গ্রেফতারের পর তার কাছ থেকে দুটি পাসপোর্ট ও ৫৭ হাজার টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব। আমেনার দেওয়া তথ্যানুযায়ী রাজধানীর আদাবর থেকে শুটার নাঈম ও রাজনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তবে মূল পরিকল্পনাকারী জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর বড় ভাই মিন্টু। মিন্টু তার ভাতিজা জসীম ও হাজি বাবুর সঙ্গে সমন্বয় করে প্রায় এক বছর আগে এ হত্যাকাণ্ডের নীলনকশা তৈরি করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি জসীমকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র সংগ্রহের দায়িত্ব দেন। ঘনিষ্ঠ কবির ও তার স্ত্রী আমেনাকে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে খুনি ঠিক করার দায়িত্ব দেন মিন্টু। তারা শুটার নাঈমকে কিলিং মিশনের জন্য নির্বাচন করে মিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। মিন্টু নাঈমকে নগদ দুই লাখ টাকা দেন। গত রোজার ঈদের এক দিন আগে জসীম তার সহযোগী হোসেন আলীর বাসায় সন্ত্রাসী মহব্বত আলী ও নাঈমকে আসতে বলেন। হোসেন আলীর বাসাটি নিহত জাহাঙ্গীরের বাসার কাছাকাছি। জসীম ওই দিন হোসেন আলীর বাসায় না গিয়ে তার আরেক সহযোগী রাজনকে দিয়ে একটি আগ্নেয়াস্ত্র পাঠিয়ে দেন। ঘটনার দিন ৯ আগস্ট সন্ধ্যা থেকে নাঈম ও মহব্বত আলী জাহাঙ্গীরের বাসার পাশে অবস্থান নেন। রাত ১১টার দিকে জাহাঙ্গীর স্ত্রী-সন্তানসহ গাড়িতে করে বাসার সামনে পৌঁছালে নাঈম তার কাছে থাকা রিভলবার দিয়ে পরপর ৬ রাউন্ড গুলি করেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা জসীম, হাজি বাবু ও রাজনের কাছে রিভলবারটি দিয়ে যান। নাঈম এ সময় আরও কয়েকজনকে দেখতে পান। বর্তমানে মিন্টু, জসীম, হাজি বাবু ও কবির কলকাতায় পলাতক। হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, জাহাঙ্গীরের শ্বশুর হাজি নূরের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে। ২০১১ সালে হাজি নূর ও তার আরেক মেয়েজামাই আবদুল মান্নান নিখোঁজ হন। তার বড় ছেলে মিন্টু একাধিক হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। সব সম্পত্তি দেখাশোনা করতেন জাহাঙ্গীর। এ সম্পত্তি নিয়ে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে মিন্টুর বিরোধ সৃষ্টি হয়।
মাদক ব্যবসা, চাঁদার ভাগ ও গরুর হাটের ইজারা নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। মিন্টুর ধারণা, তার বাবা হাজি নূর ও বোন স্বপ্নার স্বামী মান্নানের নিখোঁজের পেছনে জাহাঙ্গীরের হাত ছিল। এসব ঘটনার জেরে জাহাঙ্গীরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মিন্টু।

সর্বশেষ খবর