শিরোনাম
বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৪ ০০:০০ টা
সফল মানুষ

কমলা চাষে সফলতা

কমলা চাষে সফলতা

সমতল জমিতে মিষ্টি কমলা চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার কমলাচাষি রেজওয়ান। চলতি বছর বাজারে কমলা বিক্রি করে নিজেকে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি সংসারে ফিরিয়ে এনেছেন সুদিন। দেশের সিলেট, মৌলভীবাজার ও পার্বত্য জেলাসমূহে কমলার ভালো ফলন হলেও সমতল জমিতে কমলা চাষ এখনো লাভজনক এবং জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এই সমতল জমিতে মিষ্টিজাতের কমলা চাষের উদ্যোগ নেন করতোয়া নদীর পূর্বপাড়ের খলিসাকান্দি গ্রামের রেজওয়ান। ২০০১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে হয় তাকে। ওই সময় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি নেন। সেখানের বেতন দিয়ে পাঁচজনের সংসার আর চলে না। সংসারের আয় বৃদ্ধিতে তিনি প্রথমে বাড়ির পাশের পাঁচ শতক জমিতে একটি নার্সারি করেন।

২০০৫ সালে একটি নার্সারি থেকে ১০০ কমলার চারা সংগ্রহ করে রোপণ করেন। ২০০৮ সালে কমলার ফলন হলেও প্রথম দিকে স্বাদে টক হওয়ায় সেসব বাজারে বিক্রি করা যেত না। পরে নিজ বুদ্ধিমত্তায় ওই কমলা গাছের সঙ্গে মিষ্ট জাতের বাতাবি লেবুর চারার জোড়কলম করেন। মাটির সার, জৈবসার, বৃদ্ধি থেকে শুরু করে বাড়তি যত্ন নিতে থাকেন এবং স্থানীয় কৃষি অফিসে যোগাযোগ করেন। ২০১০ সালে প্রথম মিষ্টি কমলার ফলন পান। মিষ্টি কমলার ফলন হলে বেসরকারি সংস্থার চাকরি ছেড়ে দেন। পরের বছর আরও ভালো ফলন পান। পরবর্তী বছরে কমলার ফলন তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং প্রতিটি কমলার স্বাদ মিষ্টি হয়। চলতি বছর দুই বিঘা জমি লিজ নিয়ে মিষ্টি জাতের কমলার চাষ শুরু করেছেন। ৫ থেকে ৭ বছর বয়সী কমলার প্রতিটি গাছে ফলন ধরেছে দেড়শরও বেশি।

 

রেজওয়ান বলেন, মিষ্টি জাতের কমলা চাষ করে বগুড়ায় কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সম্ভব। শুধু পাহাড়ি অঞ্চল নয়, এই জাতের কমলা এখন সমতল ভূমিতেও চাষযোগ্য। এ বছর স্থানীয় বাজারে বেশ কিছু কমলা বিক্রি করা হয়েছে। কমলার বাগান করে সংসারের আয় বেড়েছে। এখন আর কোনো চাকরি করি না। কমলার বাগান এবং নার্সারি করে যে আয় হয় তা দিয়ে সংসারের সব খরচ মেটানো সম্ভব। মিষ্টি জাতের কমলা উদ্ভাবন এবং নিজেই চাষ করে ও কলম করা চারা বিক্রি করে অর্থনৈতিক পরিবর্তনও ঘটিয়েছেন রেজওয়ান। তার নার্সারিতে বিভিন্ন এলাকার চাষিরা আসছেন এখন কমলার চারা সংগ্রহ করতে।

বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির পরিচালক এ কে এম জাকারিয়া জানান, সমতল জমিতে মিষ্টি জাতের কমলা চাষ আমাদের হতবাক করেছে। রেজওয়ান নিজের বুদ্ধিতে মিষ্টি কমলার চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। স্থানীয় বাজারে এমনিতেই কমলার অনেক চাহিদা। কমলা বিক্রি করে একটি পরিবার নিশ্চিতভাবে মাসিক খরচ মেটাতে পারবে। মাঠ পর্যায় অন্যান্য কৃষকদের কমলা চাষে উৎসাহিত করা হবে।

 

 

 

 

 

 

সর্বশেষ খবর