শনিবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা

নিরীহ মানুষ আর অর্থনীতি জিম্মি

আতিকুল ইসলাম

নিরীহ মানুষ আর অর্থনীতি জিম্মি

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কেবল নিরীহ মানুষ আর অর্থনীতি জিম্মি বলে মনে করেন পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি আতিকুল ইসলাম। তার মতে, রাজনীতির নামে এই সহিংসতা থামাতেই হবে। বোমা-পেট্রল মেরে নাশকতা হতে পারে, হরতাল-অবরোধ হয় না বলে মনে করেন এই রপ্তানিকারক। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে পোশাকশিল্প মালিকদের এই নেতা রাজনীতিবিদদের উদ্দেশে বলেন, 'দয়া করে আপনারা অর্থনীতি নিয়ে একটু চিন্তা করেন। দেশে এখন প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎস তৈরি পোশাকপণ্য। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে আমাদের প্রতিদিন ৯৬০ কোটি টাকা মূল্যের পোশাকপণ্য উৎপাদন করতে হবে। তা করতে ব্যর্থ হলে চলতি অর্থবছরের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে না।'

তার মতে, চলতি অর্থবছরে তৈরি পোশাকপণ্য রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; যা টাকার অঙ্কে প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা। সে হিসেবে এক দিন অবরোধ-হরতাল থাকলে ৬৯৫ কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়। আর প্রতিদিন এই শিল্পে প্রকৃত উৎপাদনের মূল্যমান হচ্ছে প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা। যদি উৎপাদন হরতাল-অবরোধের কারণে ৫০ শতাংশও বিঘি্নত হয়, তাহলে প্রতিদিন উৎপাদন ব্যাহত হয় অন্তত ২১৫ কোটি টাকার। এই যে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা এভাবে অপচয় হচ্ছে, তা ১৬ কোটি মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য মোটেই শুভ নয়।

হরতাল-অবরোধে রাজনীতির স্থায়ী সমাধান হবে না দাবি করে আতিকুল ইসলাম বলেন, হরতাল-অবরোধে কেবল দেশের সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। অর্থনীতিকে জিম্মি করে ধ্বংস করা হচ্ছে।

বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, এক দিনের হরতালে শুধু এ খাতের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় কমপক্ষে ১০৮ কোটি টাকা। হরতালের কারণে ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে পোশাক খাতের ক্ষতি হয়েছে ৮০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। শুধু ১৯৯৯ সালেই ক্ষতির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা। এ হিসেবে প্রতি বছরে ক্ষতি হয়েছে ৮ হাজার ৩৮ কোটি টাকা। বর্তমান সময়ে হরতালের প্রতিটি দিনে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০০০ সালের তুলনায় দ্বিগুণ।

 

 

সর্বশেষ খবর