শনিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ আজ

ভোটার করতে বাড়ি বাড়ি না যাওয়ার অভিযোগ

ভোটার তালিকা হালনাগাদের দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে আজ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করছে নির্বাচন কমিশন। এর আগে গত ১ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটার তালিকার বিষয়ে দাবি-আপত্তি-সংশোধন ও স্থানান্তরের আবেদন করার সুযোগ দেয় ইসি। এতে সারা দেশে প্রায় ৮৯ হাজার ৮৭৮ জন ভোটার আবেদন করেন। কমিশন এর মধ্যে ১২ হাজার ৫০৫ জনের আবেদন বাতিল করে বাকিগুলো গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বাছাই কমিটি। হালনাগাদ তালিকা সমন্বয় করে আজ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে। এদিকে অনেক এলাকায় তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়িতে না গিয়ে এক স্থানে বসেই ফরম পূরণ করার বিস্তর অভিযোগ এসেছে কমিশনে। এ ছাড়া প্রচারণার জন্য বরাদ্দ থাকলেও তা সঠিকভাবে ব্যয় করা হয়নি বলে সাধারণ নাগরিকরা জানিয়েছেন। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগ (এনআইডি) ডাটাবেজের দেওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশের ৫১৪টি নির্বাচন অফিসের দাবি-আপত্তি-সংশোধনের তথ্য একীভূত করা হয়েছে। ওই তথ্য অনুযায়ী, খসড়া হালনাগাদ ভোটার তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি-সংশোধনী ও স্থানান্তরে জমা পড়েছে ৮৯ হাজার ৮৭৮টি। এর মধ্যে নতুন ভোটার হতে আবেদন করেছেন ৬০ হাজার ৪৫৮ জন, ভোটার এলাকা স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেছেন ১১ হাজার ২১২ জন, তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন ১৭ হাজার ৬৩৭ জন এবং ৫৭১ জন ভোটারের বিরুদ্ধে আপত্তি জমা পড়েছে। এসব যাচাই-বাছাই করে ১২ হাজার ৫০৫ জনের আবেদন বাতিল করে সর্বশেষ ৭৭ হাজার ২৬৯ জনের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। এনআইডি শাখার কর্মকর্তারা জানান, বাতিল হওয়া আবেদনের মধ্যে রয়েছে- নতুন ভোটার হওয়ার দাবিকৃত ৭ হাজার ২৩৬টি। ভোটার এলাকা স্থানান্তরের ২ হাজার ৮৫৩টি, তথ্য সংশোধনের ২ হাজার ১৭০টি এবং ২৪৬টি ভোটারের বিরুদ্ধে করা আবেদন আপত্তি বাতিল করা হয়েছে। গত  ২২ জানুয়ারি এসব দাবি-আপত্তি-সংশোধন ও স্থানান্তর নিষ্পত্তি করা হয়। ইসি ও এনআইডি তথ্য অনুযায়ী, হালনাগাদে ভোটার হতে না পারায় ২ থেকে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ দিনে দেশের ৫১৪টি উপজেলা ও থানা নির্বাচন অফিসে ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ তালিকাভুক্তির আবেদন করেছেন। এদের অনেকেই তথ্য সংগ্রহকারীদের দেখা পাননি। তাদের বাসায় তথ্য সংগ্রহকারীরা যাননি বলে জানান তারা। নতুন ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হয় গত ১৫ নভেম্বর। ২ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয় খসড়া ভোটার তালিকা। এ তালিকা সম্পর্কে দাবি-আপত্তি, অভিযোগ ও নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তির জন্য ১৫ দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
 ইসি কর্মকর্তারা জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য সারা দেশে ৪৮ হাজার ৩০০ জন তথ্য সংগ্রহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের দায়িত্ব ছিল, বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটার তালিকাভুক্ত করা, বিদ্যমান জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল থাকলে সংশোধন, মৃতদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং স্থানান্তরের তথ্য সংগ্রহ করা। আর তথ্য সংগ্রহকারীদের কার্যক্রম দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন প্রায় ১০ হাজার সুপারভাইজার।
একেকজনের তথ্য সংগ্রহ বাবদ তথ্য সংগ্রহকারীরা ২০ টাকা ও সুপারভাইজারদের ৪ টাকা হারে সম্মানী দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ মে থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত তিন ধাপে সারা দেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫৬ কোটি টাকা। হালনাগাদের তালিকায় ৪৬ লাখ ৭২ হাজার ১৭৬ জন নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি ও মারা যাওয়ায় ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯০১ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। স্থানান্তর হয়েছে ৪ লাখ ৮ হাজার ১৮৫ জন।

সর্বশেষ খবর