শনিবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৫ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

অঙ্গীকারের এক ভাগ অর্থও মিলল না

ইউএনডিপির বিশ্লেষণ অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোর অর্থ সহায়তার অঙ্গীকার পূরণ হলে বাংলাদেশ প্রতি বছর ১৫ বিলিয়ন ডলার করে পাওয়ার কথা। মাথাপিছু এ হার হচ্ছে ১১২ ডলার করে। সে স্থলে বাংলাদেশ পেয়েছে মোট অঙ্গীকারের মাত্র ১%। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে এ মোমেন বলেন, তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতাপূর্ণ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি)-এর অধিকাংশই অর্জনে সক্ষম হয়েছে। রাষ্ট্রদূত মোমেন উল্লেখ করেন, জাতিসংঘে করা অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর অন্যতম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এনআরবি নিউজ
রাষ্ট্রদূত মোমেন বলেন, এলডিসি সত্ত্বেও বাংলাদেশ দ্রুত এলডিসি থেকে উত্তরণে ব্যাপক উন্নয়ন করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে মাথাপিছু মোট জাতীয় আয়, মানবসম্পদ সূচক এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক-  এই তিনটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। মাথাপিছু আয় ২০০৮ সালের ৬৩০ মার্কিন ডলার থেকে ১ হাজার ২০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে গত বছর। যা এলডিসি উত্তরণ-সীমা ১ হাজার ২৪২ ডলারের কাছাকাছি। দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ থেকে ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশে শিক্ষার ক্ষেত্রে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত লিঙ্গ-সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতি হাজার জীবিত-জন্ম ৫ বছরের কম শিশুমৃত্যুর হার ২০০৮ সালের ৬৫ থেকে গতবছর ৩৪-এ নেমে এসেছে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। প্রায় শতভাগ মানুষ নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন সুবিধার আওতায় এসেছে। উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে তাদের মোট জাতীয় আয়ের ০.৭০ শতাংশ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে দেওয়ার কথা। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে মোট জাতীয় আয়ের ০.১৫ শতাংশ থেকে ০.২০ শতাংশ অর্থ সহায়তা দেওয়ার কথা। কিন্তু অধিকাংশ উন্নত দেশই তাদের প্রতিশ্রুতির অনেক পিছনে আছে। পর্যালোচনা বৈঠকে জানানো হয়, ২০১৩ সালে এলডিসিগুলোতে দ্বিপক্ষীয় ওডিআই প্রবাহ ১২.৩ শতাংশ বেড়েছে। যদিও ২০১২ সালে তা ৯.৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উন্নয়ন সহায়তা দিতে উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। জাতিসংঘ সদর দফতরে এলডিসি বিষয়ক চতুর্থ জাতিসংঘ সম্মেলনের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় সাধারণ পরিষদ এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের প্রেস সেক্রেটারি বিজন লাল দেব ২৮ জানুয়ারি এ তথ্য জানান। এলডিসি বিষয়ক চতুর্থ জাতিসংঘ সম্মেলন ২০১১ সালের ৯-১৩ মে ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলো ২০১১-২০২০ দশকের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে দারিদ্র্য দূরীকরণ, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জন এবং ২০২০ সালের মধ্যে ৪৮টি এলডিসির অর্ধেক উচ্চতর স্তরে উন্নয়নের লক্ষ্যে এলডিসিগুলোর কাঠামোগত চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করা।
গত সপ্তাহে সাধারণ পরিষদ অভিমত প্রকাশ করে যে, এলডিসিগুলোর উন্নয়নে উন্নত দেশগুলোর উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ)’র প্রতিশ্রুতি পূরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বশেষ খবর